গান্ধী জয়ন্তীতে রাজঘাটে তৃণমূলের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে দিল্লি পুলিশের গান্ধীগিরির পরিবর্তে দাদাগিরি
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: গান্ধী জয়ন্তীতে দিল্লির রাজঘাটে তৃণমূল কংগ্রেসের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বলপূর্বক বাধা সৃষ্টি করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধিনে থাকা দিল্লি পুলিশ। এদিন রাজঘাটে কর্মসূচি শেষে সেখানেই সাংবাদিক বৈঠক করতে গিয়ে পুলিশি বাধার মুখে পড়লেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশের বাধার সম্মুখিন হলেন তৃণমূলের অন্য নেতা এবং কর্মীরাও।
কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রতিবাদে ২ ও ৩ অক্টোবর দিল্লিতে ধর্না কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল। আগে থেকে আবেদন জানিয়েও যন্তরমন্তরে মেলেনি পুলিশি অনুমতি। প্রতিবাদে রাজঘাটে গান্ধী প্রতিকৃতিতে মাল্যদানের পর সেখানেই ২ ঘণ্টা অবস্থানে বসেছিলেন তৃণমূলের নেতা, কর্মীরা।
সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ রাজঘাটের সামনে সাংবাদিক বৈঠক শুরু করছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। সেই সাংবাদিক বৈঠক কিছুক্ষণ চলার পরই দিল্লি পুলিশের তরফে বার বার বাধা আসতে শুরু করে। তারা জানায় এ বার কথা বন্ধ করতে হবে। ফাঁকা করে দিতে হবে রাজঘাত চত্বর। কারণ গান্ধী জয়ন্তীতে রাজঘাটে আসবেন সাধারণ মানুষ। তাদের জন্য গেট খুলতে হবে। আন্দোলনকারীদের ছেড়ে দিতে হবে এলাকা। এ নিয়ে দিল্লি পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটিও হয় অভিষেকের। অভিষেক তাঁদের বলেন, ‘‘আপনারা গেট খুলে দিন। মানুষকে আসতে দিন।’’ কিন্তু দিল্লি পুলিশ সে কথা না শুনে কানের কাছে ক্রমাগত হুইসল বাজাতে শুরু করে।
দিল্লি পুলিশের সেই নিরন্তর হুইসলের শব্দে কথা বলা সম্ভব হচ্ছিল না। তার পরও অভিষেক চালিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁর সাংবাদিক বৈঠক। কিন্তু এর পর মাইকে ঘোষণা করে তাঁকে এলাকা ছাড়তে বলা হয়। দিল্লি পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা ঘোষণা করেন অবিলম্বে যেন অভিষেক-সহ জায়গাটি ফাঁকা করে দেন। পরমুহূর্তেই দেখা যায় তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। নিরপত্তারক্ষীরা ঢুকে পড়েছেন তৃণমূলের জমায়েতের ভিতরে। এর পরেই অভিষেক সাংবাদিক বৈঠক বন্ধ রেখে মাঝ পথে গাড়িতে বসে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হন।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতে অভিষেক বলেন, “আমরা যন্তরমন্তরে কর্মসূচি করতে চেয়েছিলাম, পুলিশ দেয়নি। তাই রাজঘাটে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করতে আসি। এখানে আমরা ২ ঘণ্টা বসেছিলাম। কোনও রাজনৈতিক স্লোগান ব্যবহার করা হয়নি। তবু দিল্লি পুলিশ, সিআইএসএফ, সিআরপিএফ বারে বারে আমাদের উঠিয়ে দিতে চেয়েছে। মহিলাদের পর্যন্ত ধাক্কাধাক্কি করা হয়েছে।” অভিষেকের এই কথার মাঝেই নতুন করে দিল্লি পুলিশ বাধা সৃষ্টি করে বলে অভিযোগ। যাকে ঘিরে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে রাজঘাটে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, কখনও আধাসামরিক বাহিনী বা কখনও দিল্লি পুলিশ মহিলাদের উপর আক্রমণ করে। আমাদের কর্মী-সমর্থকদের ধাক্কাধাক্কি করা হয়। সকলের মনে রাখা উচিত যে মহাত্মা গান্ধী কারও পৈতৃক সম্পত্তি নয়।