ডাহা ফেল মোদীর অর্থনীতি? কী বলছে দেশ-বিদেশের সমীক্ষা?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: টান পড়েছে দেশের ক্রয়ক্ষমতা এবং শিল্পলগ্নিতে, উৎসবের মরশুমের প্রাক মুহূর্তে মন্দার কালো ছায়া দেশের অর্থনীতিতে। একদিকে, ভারতবাসীর সঞ্চয়প্রবণতা এবং ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে, শিল্প স্থাপনেও ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছের মন্দার ছাপ। এমনই তথ্য উঠে আসছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্টে এবং দেশ-বিদেশের নানান সমীক্ষায়। একের পর এক দেশি-বিদেশি সংস্থার সমীক্ষায় এবং বণিকসভাগুলির পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরে নতুন প্রকল্প ঘোষণা ও স্থাপনের হার এক ধাক্কায় অনেকটাই কমেছে। বেসরকারি ও সরকারি, উভয় সংস্থার লগ্নিহার এবং প্রকল্পব্যয় কমছে, যা যথেষ্ট উদ্বেগের।
ব্লুমবার্গ সমীক্ষা রিপোর্টের দাবি করা হয়েছে, ভারত সরকার মূলত তিন সেক্টরের প্রকল্প ব্যয়ের অর্থ জোগাড় করে, ট্যাক্স ও সাধারণ মানুষের নানাবিধ সঞ্চয় প্রকল্পের টাকা থেকে। তিন সেক্টর হল, পরিকাঠামো, যন্ত্রাংশ এবং উপকরণ। প্রকল্পের বাস্তবায়ন হচ্ছে না। পরিকাঠামো প্রকল্প রূপায়িত হওয়ার আশায় এবারের বাজেটে ১০০ দিনের কাজেও বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মোদী সরকার ভেবেছিল দেশজুড়ে এত বেশি প্রকল্প রূপায়িত হবে যে, গ্রামে কাজের চাহিদা কমবে। যদিও বাস্তবে হয়েছে উল্টোটা। বেকারত্বের বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্রামীণ ভারতে ১০০ দিনের কাজের চাহিদা বিপুল হারে বেড়েছে।
সেন্টার ফর মনিটরিং অব ইন্ডিয়ান ইকনমির সমীক্ষা বলছে, অর্থ বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে। আগের ত্রৈমাসিকেই এই প্রকল্প প্রস্তাবের পরিমাণ ছিল ৬ লক্ষ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৮২ শতাংশ কমেছে মাত্র দুই ত্রৈমাসিকেই। বিগত বছরে এই একই সময়সীমায় যে পরিমাণ শিল্প লগ্নির প্রস্তাব এসেছিল ও শিল্প চালু হয়েছিল, তা চলতি অর্থ বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ৭৭ শতাংশ কমে গিয়েছে। সরকারি সংস্থার প্রকল্প প্রস্তাব ও ঘোষণা, দুই দ্রুতহারে কমছে।
২০১৯-র লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ২০১৮ অর্থ বছরের প্রথম ৬ মাসে ৯ লক্ষ কোটি টাকার বেশি প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছিল। আগামী বছর লোকসভা ভোট কিন্তু এবার চলতি অর্থ বছরের প্রথম ৬ মাসে সাড়ে ৭ লক্ষ কোটি টাকায় আটকে রইল প্রকল্প ঘোষণার হার। ভোগ্যপণ্য বিক্রয় নিয়ে প্রতিটি সংস্থার রিপোর্টেই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের সঞ্চয় কমছে। ভোগ্যপণ্যের দিক থেকেও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ক্রেতারা। চাহিদা কমায় নতুন লগ্নিও কমেছে দ্রুত। অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে।