এবারে ঘোটকে দুর্গার আগমন-প্রস্থান, শাস্ত্রমতে কেমন কাটবে আগামী একটা বছর?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আর মাত্র কয়েকটা দিনের অপেক্ষা। ইতিমধ্যেই শেষের দিকে পাড়ায় পাড়ায় পুজো প্যান্ডালের প্রস্তুতি। প্রথা মেনে বনেদি বাড়িগুলোর পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয় রথের সময় থেকেই। কিন্তু জ্যোতিষ মতে এবার মা দুর্গার আসা ও যাওয়া ঘোটকে অর্থাৎ ঘোড়ায় যা অশুভ ইঙ্গিত বহন করে। শাস্ত্রমতে দেবীর আগমন এবং প্রস্থানের উপযুক্ত বাহন হল হস্তি বা হাতি। লোকবিশ্বাস এতে নাকি শান্তি বজায় থাকে। পৃথিবীতে শস্যে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
এবারের মহালয়া ১৪ অক্টোবর। ২১ অক্টোবর মহাসপ্তমী। পুরাণ মতে, এই দিনই দেবীর আগমণ হয় মর্ত্যলোকে। গমন দশমীতে। শাস্ত্রমতে দেবী দুর্গার আগমণ আর প্রস্থান কোন কোন দিনে পড়বে তার ওপরই নির্ধারিত হয় বাহন। এবার দেবীর আগমণ সপ্তমীতে অর্থাৎ মঙ্গলবারে। আর বিজয় দশমী পড়েছে শনিবার। এই দুই দিন যদি দেবীর আগমণ আর প্রস্থান হয় তবে ঘোড়াকেই দেবীর বাহন বলে উল্লেখ রয়েছে পুরাণে। তেমনই রবি বা সোমবার দেবীর বাহন হস্তি। বৃহস্পতিবার আর শুক্রবার দেবীর বাহন পালকি বা দোলা। বুধবারে দেবীর বাহন নৌকা।
এবছরে দেবীর আগমণ আর প্রস্থান ঘোড়ায় শাস্ত্রে বলা হয়েছে দেবী যদি ঘোড়া চড়ে তাহলে ‘ছত্র ভঙ্গ স্তুরঙ্গ’ অর্থাৎ সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সামরিক অস্থিরতা বেড়ে যাবে। পুরাণ মতে, ঘোড়ায় আগমণ খরা, দুর্ভিক্ষ, মহামারির ইঙ্গিত বহন করে। ঘোটক/ ঘোড়া যুদ্ধের প্রতীক। তাই যুদ্ধেরও ইঙ্গিত বহন করে। পুরাণে বলা হয়েছে, যুদ্ধ মহামারি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগেই থাকবে। কারও স্বাস্থ্য ভাল যাবে না।
এপ্রসঙ্গে দৃষ্টিভঙ্গিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সর্বভারতীয় প্রাচ্য বিদ্যা অ্যাকাডেমির প্রিন্সিপাল ডঃ জয়ন্ত কুশারী গাণিতিক নিয়মের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “মা পাঁচটা যান ব্যবহার করেন। তার মধ্যে কতকগুলো ভালো, কতকগুলো খুবই খারাপ। যেমন ঘোড়াকে বলা হয় ‘ছত্র ভঙ্গ স্তুরঙ্গম’ অর্থাৎ তুরঙ্গ কথার অর্থ ঘোড়া, আর ছত্রভঙ্গ মানে একদম বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া। গোটা বিশ্ব ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাবে। বিচ্ছিন্নভাবে এমন কিছু ঘটনা ঘটবে যা আমরা কল্পনা করতে পারব না।”
মায়ের ঘোড়াতে আসার প্রভাব সম্পর্কে ডঃ জয়ন্ত কুশারী বলেন, “মানুষের সঙ্গে সামাজিক, আর্থিক, রাষ্ট্রনৈতিক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার প্রভাব কিছুটা কমে যাবে, যেহেতু মা আবার ঘোড়াটা নিয়ে চলে যাচ্ছেন। উগ্রপন্থীদের কার্যকলাপ বেড়ে যাবে। মানুষরা ‘হট টেম্পার’ হয়ে যাবে। মানুষের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙবে। শুধু মানুষের ব্যাপার নয়, প্রকৃতিতেও এর প্রভাব পড়তে পারে। যেমন শষ্যহানি, হঠাৎ অতিরিক্ত বৃষ্টি, এটা পুরোটাই গানিতিক নিয়মেই হবে।” এছাড়াও কিছুটা স্বস্তির খবর হিসেবে তিনি জানিয়েছেন, “মা ঘোড়াতে আসছেন আবার ঘোড়াতে চলে যাচ্ছেন। এর ফলে সেই ছত্রাকারভাব থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যাবে। স্বস্তির কথা হল মা আবার ঘোড়াটাকে নিয়ে চলে যাচ্ছে।”