জাতিভিত্তিক জনগণনার রিপোর্ট প্রকাশ করে মোদীকে চ্যালেঞ্জ নীতিশের?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: জাতিভিত্তিক জনগণনার দাবিকে একেবারেই পাত্তা দিচ্ছে না মোদী সরকার। মহিলা আসন সংরক্ষণ বিলে ওবিসি কোটার দাবিও উড়িয়ে দিয়েছে মোদী সরকার। এই আবহে গান্ধীজয়ন্তীতে বিহারের জাতিভিত্তিক গণনার রিপোর্ট প্রকাশ করে খোদ মোদীকে চাপে ফেলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। রিপোর্টে উঠে এসেছে, বিহারে এখন অন্যান্য অনগ্রসর গোষ্ঠী ওবিসি-র মানুষই ৬৩ শতাংশ, অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি। মাত্র ১৫.৫২ শতাংশ মানুষ অসংরক্ষিত সাধারণ শ্রেণিভুক্ত। লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে এমন চাঞ্চল্যকর রিপোর্টের জেরে জাতীয় রাজনীতিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। রিপোর্ট প্রকাশ হতেই বিজেপি ও বিরোধীদের মধ্যে চাপানউতোর আরম্ভ হয়েছে।
আসরে নেমেছেন খোদ মোদী। মধ্যপ্রদেশে জনসভায় তিনি অভিযোগ করেন, ক্ষমতায় থেকে কোনও উন্নয়নের কাজ না করতে পারেনি বিরোধীরা। তাই নাকি গরিব মানুষের আবেগ নিয়ে তারা খেলা করতে চাইছে। বিভাজন তৈরির চেষ্টা চলছে। এমনই দাবি মোদীর। যদিও রিপোর্টকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেছেন নীতীশ। নীতিশ সরকারের শরিক দল আরজেডির নেতা লালুপ্রসাদ যাদব, ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন। ‘যত বেশি জনসংখ্যা, তত বেশি অধিকারে’র কথা ফের মনে করিয়ে দিয়েছে কংগ্রেসও।
কেন্দ্র ও বিভিন্ন রাজ্যে সরকারি চাকরি ও শিক্ষাক্ষেত্রে ওবিসিদের জন্য সর্বোচ্চ ২৭ শতাংশ সংরক্ষণ রয়েছে। বিহারের এহেন পরিসংখ্যান লোকসভা ভোটের আগে দেশজুড়ে ওবিসিদের জন্য আরও বেশি সংরক্ষণের দাবিকে হয়ত আরও জোরালো করে তুলল। আশঙ্কায় সিঁদুরে মেঘ দেখছে গেরুয়া শিবির। কারণ এতে মোদী-শাহর হিন্দু ভোটব্যাঙ্কে ধাক্কা লাগবে পাশাপাশি ফায়দা পেতে পারে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’।
উল্লেখ্য, গোটা দেশে এই প্রথম বিহারে জাতিভিত্তিক গণনা হল। ধর্ম অনুসারে বিহারের ৮২ শতাংশ বাসিন্দাই হিন্দু। মুসলিম মাত্র ১৭.৭০ শতাংশ। নীতীশ সরকারের প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, বিহারের মোট ১৩ কোটি জনসংখ্যার ৬৩ শতাংশই ওবিসি। তারমধ্যে ৩৬ শতাংশ অতি অনগ্রসর এবং ২৭.১৩ শতাংশ অনগ্রসর। সবচেয়ে বড় অংশজুড়ে রয়েছে যাদব সম্প্রদায়, প্রায় ১৪ শতাংশ। কুর্মি সম্প্রদায় বেশ অনেকটাই কম, ২ শতাংশের সামান্য কিছু বেশি। বিহারে তফসিলি জনগোষ্ঠী ১৯.৬৫ শতাংশ আর তফশিলি উপজাতি ১.৬৮ শতাংশ।