ভুয়ো জবকার্ড, ১০০ দিনের কাজের টাকা নয়ছয় শীর্ষে উত্তরপ্রদেশ, বলছে খোদ কেন্দ্র
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মোদী আমলে ডবল ইঞ্জিন উত্তরপ্রদেশে ১ কোটি ১১ লক্ষেরও বেশি জবকার্ড বাতিল হয়েছে। খোদ মোদী সরকারের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক এই তথ্য জানিয়েছে। আর এই তথ্যকেই হাতিয়ার করেছে তৃণমূল। বাংলার প্রতি মোদী সরকারের বঞ্চনার বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন চালাচ্ছে রাজ্যের শাসক দল। বিজেপিকে তোপ দেগে তৃণমূল বলছে, ১০০ দিনের কাজের টাকা লুটে শীর্ষে যোগীরাজ্য। কিন্তু তাদের বরাদ্দ বন্ধ করা হচ্ছে না। কেবলমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বাংলার প্রাপ্য টাকা আটকে রাখা হচ্ছে বলেই অভিযোগ রাজ্যের শাসক দলের। প্রায় দু’বছর ধরে বন্ধ রয়েছে রাজ্যের ১০০ দিনের কাজের বরাদ্দ।
একশো দিনের কাজকে কেন্দ্র করে উত্তরপ্রদেশের পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাংলার পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। তাঁর কথায়, বাতিল হওয়া জবকার্ড যদি দুনীর্তির ‘সূচক’ হয়, তবে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে সেগুলি কীসের প্রতীক? কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথা অনুযায়ী ধরে নিতে হয় ১০০ দিনের কাজে সবচেয়ে বেশি টাকা লুট হয়েছে ডবল ইঞ্জিন উত্তরপ্রদেশে। খোদ যোগী আদিত্যনাথের দপ্তরে নিত্যদিন বলরামপুর, গোন্ডা, শোনভদ্র, মাহোবা, কুশীনগরের মতো জেলা থেকে ১০০ দিনের কাজে বিজেপি নেতাদের দুর্নীতি ও টাকা লুটের অভিযোগ জমা পড়ছে। সেই খবর প্রকাশ করে ললিতপুরে রোষে পড়তে হয়েছে একাধিক সাংবাদিককে। এত দুর্নীতির পরেও ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যকে বঞ্চনা করা হয়নি। মোদী সরকারের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের এহেন দ্বিচারিতাকেই নিশানা করেছে জোড়াফুল শিবির।
মূলত তিনটি নিয়ম মেনে বিভিন্ন রাজ্যে জবকার্ড বাতিল করা হয়েছে, মোদী সরকারের ঠিক করে দেওয়া নিয়মগুলি হল, তিন বছরের বেশি সময় ধরে যদি কোনও পরিবার কাজ না চায়, তাদের জবকার্ড বাতিল হয়েছে। যে পরিবারগুলি গ্রামীণ এলাকার বাইরে অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়েছে, তাদের জবকার্ড বাতিল হয়েছে। পরিবার বিভক্ত হওয়ায় অতিরিক্ত জবকার্ড ইস্যু হয়ে গিয়েছে, তাদের ক্ষেত্রেও কিছু জবকার্ড বাতিল হয়েছে। এই তিন নিয়ম মেনে গত অর্থ বছরে বাংলায় যথাক্রমে ১৩ লক্ষ ৫৯ হাজার, ৪ লক্ষ ৯৪ হাজার এবং ২ লক্ষ ৪১ হাজার জবকার্ড বাতিল হয়। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ২১ লক্ষ। একই সময়কালে যোগী রাজ্যে ৪৪ লক্ষ ৭৫ হাজার ৬৩৪টি জবকার্ড বাতিল হয়েছে। কেন্দ্রের এই পরিসংখ্যান নিয়ে সরব হন বাংলার পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। তাঁর সাফ প্রশ্ন, উত্তরপ্রদেশে, বাংলার তিনগুণ বেশি কার্ড বাতিল হয়েছে। তবে কেন কেবল বাংলার দিকে আঙুল তোলা হচ্ছে, কেন এই দ্বিচারিতা? রাজনৈতিক প্রতিহিংসাই কি এর একমাত্র কারণ? উঠছে প্রশ্ন।