ডায়মন্ড হারবারের ভট্টাচার্য বাড়িতে কীভাবে শুরু হয়েছিল দেবী দুর্গার আরাধনা?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: লক্ষ্মীন্দরের প্রাণ ফিরে পেতেই মনসার আরাধনা করেছিলেন চাঁদ সওদাগর। কতকটা একইভাবে দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু হয়েছিল ভট্টাচার্য বাড়িতে। ডায়মন্ড হারবারের বাসুলডাঙার বারোদ্রোণের জমিদার লক্ষ্মীকান্ত ভট্টাচার্য অসুস্থ হয়ে হঠাৎ করেই মারা গেলেন। তাঁকে দাহ করতে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হল। চিতা সাজানোর সময় তিনি জেগে উঠলেন। সবাই হতবাক! এমন অলৌকিক ঘটনার পর থেকে ভট্টাচার্য বাড়িতে দুর্গাপুজো করার সিদ্ধান্ত নিলেন লক্ষ্মীকান্তর বাবা হরমোহন ভট্টাচার্য। আজ থেকে প্রায় তিনশো বছর আগে বাসুলডাঙার ভট্টাচার্য পরিবারে পুজোর সূচনা হয়েছিল এমনভাবেই। আজও রীতি রেওয়াজ মেনে এই পরিবারের সদস্যরা পুজো করে চলেছেন।
এই বাড়ির পুজোর অন্যতাম বৈশিষ্ট হল, এ বাড়ির ঠাকুরের ভোগ থেকে নাড়ু তৈরি এবং পুজো অর্চনা গঙ্গাজল দিয়েই সম্পন্ন হয়। একদা এ বাড়ির পুজোয় ১৪টি পাঁঠা বলি হত। এখন সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীতে তিনটি পাঁঠা বলি হয়। আখ ও চালকুমড়োও বলি দেওয়া হয়। পুজোর সূচনালগ্নে বন্দুক চালানোর রীতি এখন আর মানা হয় না। আগে গ্রামের প্রায় সব মানুষ ভোগ খেতেন। এখন সংখ্যাটা অনেক কমে গিয়েছে।
দেবীর অস্ত্রশস্ত্র সব রুপোর তৈরি। দুর্গাকে সোনার গয়না দিয়ে সাজানো হয়। এই বাড়ির পুজোয় গ্যালন গ্যালন গঙ্গাজলের প্রয়োজন। একদা ৮০টি মাটির কলসি ভর্তি করে দক্ষিণ বিষ্ণুপুর থেকে গঙ্গার জল নিয়ে আসা হত। এখন মহালয়ার পর থেকেই গঙ্গাজল মজুত হতে শুরু করেন পরিবারের সদস্যরা। সন্ধ্যার আগেই এ বাড়িতে ঠাকুর বিসর্জন দেওয়ার রীতি রয়েছে।