জীববৈচিত্রে ভরপুর বনাঞ্চলে আদানিদের খননকার্যের অনুমতি দিচ্ছে মোদী সরকার?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মোদী ও আদানির সখ্যতা নিয়ে বারবার অভিযোগ করেন বিরোধীরা। কিছুদিন আগেই অভিযোগ উঠেছিল, মোদী সরকার কয়লা ব্লক নিলামে আদানিদের বিশেষ সুযোগ পাইয়ে দিয়েছে। এবার আরও এক অভিযোগ উঠছে। মোদী সরকারের কয়লা মন্ত্রক পরিবেশের বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা না করে, দেশের ঘন বনাঞ্চলগুলিতে খনন কার্য চালানোর জন্য তথা খনির জন্য উন্মুক্ত করে দিচ্ছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারী পাওয়ার সেক্টর কোম্পানিগুলির অধীনে থাকা একটি শিল্প গোষ্ঠীকে বিশেষ সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠছে।
শোনা যাচ্ছে, কয়লার ঘাটতি মেটাতে ভারতের ঘন জঙ্গলাঞ্চলে অবস্থিত দুটি কয়লা ব্লক নিলামের জন্য ২০২১ সালের নভেম্বরে কয়লা মন্ত্রকের কাছে আবেদন করেছিল অ্যাসোসিয়েশন অফ পাওয়ার প্রোডিউসারস। অভিযোগ উঠছে, আদানি গোষ্ঠীকে তা পাইয়ে দেওয়ার জন্যে এমনটা করা হয়েছিল। অ্যাসোসিয়েশন যে দুটি ব্লকের জন্য আবেদন করেছিল, তার মধ্যে একটি মধ্যপ্রদেশের সিংগ্রাউলি কয়লাক্ষেত্রে অবস্থিত। তার কাছেই রয়েছে একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র যা আদানি গোষ্ঠী ২০২২ সালের মার্চ মাসে অধিগ্রহণ করেছিল। অন্যটি রয়েছে ছত্তিশগড়ের হাসদেও আরন্দ বনাঞ্চলে, আদানি গ্রুপের খনন করা কয়লা ব্লকগুলির কাছে অবস্থিত। মোদী সরকারের কয়লা মন্ত্রক শুধুমাত্র দুটি ব্লক খোলার দাবিকে আমল দেয়নি, বরং আরও অনেক দূর এগিয়েছে। ২০১৮ সালে পরিবেশ মন্ত্রক কিছু সুপারিশ করেছিল। ১৫টি কয়লা ব্লককে নিলাম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কারণ ওই অঞ্চলগুলো উচ্চ জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ যার সংরক্ষণ করা প্রয়োজন৷ কিন্তু এখন মোদী সরকার পরিবেশ মন্ত্রকের পরামর্শগুলির পর্যালোচনার জন্য চাপ দিচ্ছে।
পর্যালোচনার পথ প্রশস্ত করার জন্য কয়লা মন্ত্রক দেশের সেন্ট্রাল মাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ডিজাইন ইনস্টিটিউটকে দায়িত্ব দিয়েছে। ওই ১৫ ব্লকে খনন কাজের অনুমতি দেওয়ার জন্য মরিয়া চেষ্টা করা হচ্ছে। সেন্ট্রাল মাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ডিজাইন ইনস্টিটিউট কয়লা মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থা। খনি ও খনিজ সংক্রান্ত বিবিধ বিষয়ের পরামর্শদাতা হিসেবে তারা কাজ করে। সেন্ট্রাল মাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ডিজাইন ইনস্টিটিউট কয়লা মন্ত্রককে সুস্পষ্টভাবে জানিয়েছিল ১৫টি ব্লকের কোনটিতেই খননের কাজ চালানো যাবে না। কারণ, ওই এলাকাগুলো অত্যন্ত ঘন বন দ্বারা আচ্ছাদিত, খনন চালালে পরিবেশের ক্ষতি হবে। শোনা যাচ্ছে, কয়লা মন্ত্রক এই নিষেধ মানছে না। তারা খোদ নিজেদের বিশেষজ্ঞ বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠানের মতকে অগ্রাহ্য করছে।