কাতলার কালিয়া থেকে পুঁই চিংড়ি, আর কী কী থাকে মণ্ডলবাড়ির পুজোর ভোগে?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পুজো মানেই ভোগের খাওয়া-দাওয়া। বনেদি বাড়ির পুজোগুলোতে ভোগের এলাহি আয়োজন থাকে। কাতলার কালিয়া থেকে পুঁই চিংড়ি, ভোগে মাকে নানান পদ নিবেদন করেন বজবজের মণ্ডল পরিবার।
ব্যবসায় লাভ হচ্ছিল না। গান্ধীচন্দ্র মণ্ডল দুর্গার শরণাপন্ন হলেন। মায়ের আশীর্বাদে ব্যবসায় উন্নতি হল। গান্ধীচন্দ্র দুর্গার জন্য আলাদা নাটমন্দির তৈরি করলেন, মহাসমারোহে পুজো করতে আরম্ভ করলেন। মহেশতলা পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বজবজ ট্রাঙ্ক রোড লাগোয়া মণ্ডল বাড়ির পুজো আজ বিখ্যাত।
একদা দশমীতে এলাহি আয়োজন হত। দুই বেলা সাড়ে তিনশোরও উপর মানুষের পাত পড়ত। বাড়ির পুকুর থেকে আট-দশ কেজির মাছ উঠত। রান্নার ঠাকুর কালিয়া রাঁধতেন। সঙ্গে থাকত ভাত, শুক্তো, চিংড়িমাছ দিয়ে পুঁই শাক, ডাল-চাটনি ইত্যাদি। গান্ধীচন্দ্র হাতজোড় করে অতিথিদের খাওয়াতেন, দাঁড়িয়ে তদারকি করতেন। অতিথিদের বলতেন, সবই মায়ের আদেশ। জোগাড় তিনিই করেন। এমন জাঁকজমকপূর্ণ খাওয়ার আয়োজন সেই অঞ্চলে আর দুটি ছিল না। মুখে মুখে মণ্ডলদের দুর্গার নাম ঘুরত। ১৩১ বছর ধরে পূজিতা হচ্ছে এই বাড়ির দুর্গা। দেবীকে জাগ্রত বলে মনে করেন ভক্তরা। সব্বাই ভক্তি করেন। ঠাকুরের কাছে অনেকে মানত করেন। মূর্তির চরণে পদ্মফুল দেন।
শোনা যায়, এক সময় এই বাড়িতে ঘট পুজো হত। মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে একচালার মূর্তি তৈরি করেন গান্ধীচন্দ্র। এখন জৌলুস কিছুটা কমেছে। তবে নিয়মরীতি সব মানা হয়। সপ্তমী থেকে নবমী নিরামিষ হয়, দশমীতে অন্নভোগ। সেদিনও নিরামিষ। পুঁইশাক থাকে। মাছ দেবীর কাছে উৎসর্গ করে অতিথিদের খাওয়ানোর রীতি রয়েছে। অষ্টমীতে লুচি-তরকারি হয়। দশমীতে রুইমাছ, পুঁইশাক দিয়ে চিংড়ি হয়। বিদায়ের আগে মাকে সাজানো হয়। তারপর সবাই সিঁদুর খেলে, প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় নিরঞ্জনের উদ্দেশ্যে।