রাসমণির স্মৃতি বিজড়িত জামালপুরের ভট্টাচার্য বাড়ির পুজোর কাহিনি জানেন?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: জমিদারি প্রথা লোপ পেয়েছে বহুকাল, কিন্তু আজও মাতৃ আরাধনা করে চলেছে জামালপুরের ভট্টাচার্য পরিবার। এই বাড়িতেই রানি রাসমণি দুর্গাপুজো দেখতে আসতেন। তাঁর ঘোড়ার গাড়ি আসার জন্য আলাদা একটা পথ তৈরি করা হয়েছিল। পুজোর সময় একবার রানি রাসমণি জামালপুরের কাঁশরা গ্রামের ভট্টাচার্য পরিবারের সদস্যদের খাট দিয়ে গিয়েছিলেন। এখনও পরিবারের সদস্যরা তা যত্ন করে রেখে দিয়েছেন।
সে’সময় ধুমধাম করে ভট্টাচার্য বাড়িতে দুর্গাপুজো হত। গোটা গ্রামের লোকজন ভোগ খেতে আসতেন। রানি রাসমণিকে দেখার জন্য পুরো গ্রাম ভেঙে পড়ত। পুজোয় জাঁকজমকের জন্য টাকার অভাব হত না। কালের নিয়মে সেই সুদিন আর নেই। জমিদার বংশের উত্তরসূরিরা এখন আবাস যোজনার বাড়িতে থাকেন। ২০বছর আগে অর্থাভাবে পুজো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরে অবশ্য ফের পুজো শুরু হয়। জানা যায়, পরিবারের আদি পুরুষ নৃসিংহ ভট্টাচার্য পণ্ডিত মানুষ ছিলেন। দক্ষিণেশ্বরে তাঁর যাতায়াত ছিল। সেই সুবাদে রানি রাসমণির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ তৈরি হয়েছিল। নৃসিংহবাবুর মন্ত্রোচ্চারণ শোনার জন্যে রানি পুজোর সময় একদিন জামালপুরে আসতেন। তাঁর থাকার জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হত। নৃসিংহবাবু ভট্টাচার্য উপাধি পেয়েছিলেন। আদপে তাঁদের পদবি চক্রবর্তী।
একদা এই পরিবারের প্রায় ১৫০ বিঘা জমি ছিল। পূর্বপুরুষরা সবই বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন তাঁদের হাতে এক বিঘাও জমি নেই। জমিদার বাড়ি সংস্কার না হয়ে ভগ্নস্তূপে পরিণত হয়েছে। তবে প্রাচীন রীতি মেনেই পুজো করা হয়। জমিদারি না থাকলেও, ইতিহাসটুকু রয়েছে। তা আঁকড়েই বেঁচে আছেন মানুষ-জন।