বাংলার দুগ্গা পুজো: চন্দ্র বাড়িতে পুজোর স্পেশাল কী? কীভাবে হল প্রচলন?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বনেদি বাড়ির পুজোর মধ্যে উদয়নারায়ণপুরের ভবানীপুর গ্রামের চন্দ্র বাড়ির দুর্গাপুজো অন্যতম। এই পারিবারিক পুজো এবার ১৭২ বছরে পা দিল। পরিবারের যাঁরা বাইরে থাকেন তাঁরা পুজোর কটা দিন এই বাড়িতে ফিরে এসে আনন্দ যজ্ঞে সামিল হন।
জানা গিয়েছে, ঊনবিংশ শতাব্দীতে এই পরিবারের দুই ভাই বিপিন চন্দ্র ও ভবতারণ চন্দ্র উলুবেড়িয়ায় ব্যবসা করে সাফল্য লাভ করায় ভবানীপুরের বসতবাড়িতে দুর্গাপুজোর প্রচলন করেন। গড়ভবানীপুরে রায় বংশের আমলে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে বর্ধমানের রায়না থেকে এসে বসতি স্থাপন করে চন্দ্র পরিবার।
জন্মাষ্টমীর দিন এখানে দেবীর প্রতিমা তৈরি শুরু হয়। মহালয়ার আগের রাতেই সম্পূর্ণ হয় সেই কাজ। ১০ দিন ধরে চলে পুজো। প্রতিপদে চণ্ডীকল্পের মধ্যে দিয়ে পুজোর সূচনা হয়। প্রতিদিন পূজার্চনার পাশাপাশি ভোগ নিবেদন করা হয় দেবীকে। প্রচলিত রীতি অনুসারে, সন্ধিপুজোর সময় মায়ের হাতে রক্তবর্ণ চাঁদমালা দেওয়ার পাশাপাশি আখ দিয়ে দেবী চামুণ্ডার কপালে সিঁদুর দান করা হয়। আগে পুজোয় বলি প্রথা চালু থাকলেও বর্তমানে তা করা হয় না।
শোনা যায়, একসময় ঠাকুরদালানের মূল প্রবেশ পথের মাথায় বসত নহবতখানা। হুগলির হীরাপুর থেকে আনা হত নহবত। এই পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, বাড়ির মহিলাদের তৈরি নাড়ু। নাড়ু তৈরির পর ভাঁড়ার ঘরে একটি পুরনো সিন্দুকে তা রাখা হয়। পুজোর সময় সেই নাড়ু ভোগ দেওয়ার পাশাপাশি ভক্তদেরকেও দেওয়া হয়। দশমীতে দেবীকে বরণ ও সিঁদুর খেলার পর মশাল জ্বালিয়ে শোভাযাত্রা সহকারে কানা দামোদরে বিসর্জন করা হয়।