পুজো স্পেশাল বিভাগে ফিরে যান

বাংলার দুগ্গা পুজো: শ্রীরামপুর রাজবাড়ির পুজোর সাথে ইলিশ-পানের কী সম্পর্ক জানেন?

October 17, 2023 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: কয়েকশো বছরের প্রাচীন শ্রীরামপুর জমিদারবাড়ির পুজো। বৈষ্ণব মতে করা হয় এই বাড়ির পুজো। তাই বলি প্রথা নেই। পুরাতন রীতি মেনে এখানে কাঠামো পুজো রথযাত্রার দিন। মহালয়ার আগের দিন দেবী মূর্তি বেদিতে তোলা হয়। এরপর ডাকের সাজ পরানো। ষষ্ঠীতে হয় বোধন। বোধনের পর কলা বৌ স্নান। সপ্তমীতে দালানে হোমকুণ্ড জ্বলে। নবমীতে করা হয় কুমারী পুজো। ঠাকুরের ভোগে থাকে খিচুড়ি, সাদা ভাত, পাঁচ রকম ভাজা ও নানা ধরনের সব্জি। রাতে লুচি, নানারকম ভাজা ও মিষ্টি দেওয়া হয়।

বিদায় জানানোর আগে শ্রীরামপুর রাজবাড়ির মহিলারা ইলিশ মাছ ভাজা খাওয়ার পর পান মুখে মাকে বিদায় জানান । প্রতিমা নিরঞ্জনের পর পুজোর বেদীতে বাড়ির কুলদেবতা রাধামাধব অধিষ্ঠান করেন রামসীতার বেশে। হাতের বাঁশি সরিয়ে তুলে দেওয়া হয় তীরধনুক। পরানো হয় আগের পোশাক।

শোনা যায়, শেওড়াফুলির রাজা মনোহর রায়ের দেওয়া জায়গায় নদীয়ার পাটুলির রামগোবিন্দ গোস্বামী শ্রীরামপুরে বাড়ি তৈরি করেছিলেন। রাজার দেওয়া জমিদারিও পেয়েছিলেন। আজ থেকে প্রায় ৩৩৯ বছর আগে এই বাড়িতে দুর্গাপুজোর সূচনা করেন। এই পরিবারের কৃতী সন্তান ছিলেন রঘুরাম গোস্বামী। তিনি বিখ্যাত ব্যবসায়ী ও ধনকুবের হয়ে উঠেছিলেন। জানা গিয়েছে, প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত ব্যাঙ্কে তাঁর শেয়ার ছিল। ১৮৪৫ সালে ড্যানিশ সরকার শ্রীরামপুরের উপনিবেশ বিক্রি করে দিতে চাইলে রঘুরামবাবু নগদ ১২ লক্ষ টাকায় কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ইংরেজদের বাধায় তা অবশ্য সম্ভব হয়নি।

জমিদার রঘুরাম তাদের পৈতৃক বাড়ির কাছে একটি নতুন বসতবাটি গড়ে তোলেন। ইউরোপীয় স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত ঠাকুরদালান ও সমতল ছাদযুক্ত চাঁদনিও বানিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে তাঁর পৌত্র ব্রিটিশদের কাছ থেকে রাজা উপাধি পান। তৎকালীন রাজনৈতিক নেতাদের যাতায়াত ছিল এই বাড়িতে। পরিবারের দাবি, মহাত্মা গান্ধী, সুভাষচন্দ্র বসু, চিত্তরঞ্জন দাশের মতো ব্যক্তি থেকে উত্তম-সুচিত্রার মতো তারকরাও এসেছিলেন এই বাড়িতে। এছাড়া নাকি অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি, ভোলা ময়রার মতো গায়করাও কবিগান গেয়েছেন এখানে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#durga puja, #Serampore, #Durga Puja 2023, #Serampore Rajbari

আরো দেখুন