বাংলার লোকপ্রসার প্রকল্পের শিল্পীদের কর্মসংস্থান জোগাচ্ছে দুর্গাপুজো
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সেকালে ছিল কবিগান, তরজা আর একালে রয়েছে জলসা। পুজোর সঙ্গে গান-বাজনার সম্পর্ক আদি অনন্তকাল থেকেই বিদ্যমান। কমবেশি প্রায় সব পুজোমণ্ডপে, পাড়ায় পাড়ায় জলসার আসর বসে। একদা সারারাত ধরে গান-বাজনা চলত। হালে জাঁকিয়ে বসেছে থিম, জলসার ধরনেও কিছুটা বদল এসেছে। ব্যান্ডের পাশাপাশি গ্রামবাংলার লোকশিল্পও কলকাতা এবং তার আশপাশের পুজোমণ্ডপের জলসায় প্রাধান্য পাচ্ছে। রাজ্যের লোকপ্রসার প্রকল্পের আওতাধীন শিল্পীদের চাহিদা এবারে অনেকটাই বেশি বলে জানা যাচ্ছে। ছৌ নাচ থেকে শুরু করে আদিবাসী নৃত্য, গম্ভীরা পালা, পুতুলনাটক, কালিকাপাতারি, ভাটিয়ালি গান, ঘোড়ানাচ, রায়বেঁশে নৃত্য, সাঁওতালি নৃত্য এবং ঝুমুর গানের দলের চাহিদা বিস্তর।
বাংলার প্রায় ১.৯৪ লক্ষ লোকশিল্পীকে লোকপ্রসার প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। সকলকে প্রতিমাসে এক হাজার টাকার আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাঁদের অনুষ্ঠান পেতেও সাহায্য করে রাজ্য। একদিনের অনুষ্ঠানের জন্য রাজ্যের পক্ষ থেকে আলাদা করে এক হাজার টাকা দেওয়া হয়। চলতি বছর দুর্গাপুজোর সমন্বয় বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুজো উদ্যোক্তাদের কাছে লোকশিল্পীদের বেশি করে কাজে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
খবর মিলেছে, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, মালদহ ও পূর্ব বর্ধমান থেকে এই সমস্ত লোকশিল্পীর দল কলকাতায় এসে পৌঁছেছে। পুজোরদিনগুলিতে কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী পুজোগুলিতে ঘুরে ঘুরে শিল্পীরা অনুষ্ঠান করবেন। উত্তর এবং দক্ষিণ কলকাতার পাশাপাশি সল্টলেক, রাজারহাট, হাওড়া শহর, উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার শহরতলির একাধিক পুজোয় তাঁরা গান গাওয়ার জন্য ডাক পেয়েছেন।
পুরো পুজো কলকাতায় কাটিয়ে তাঁরা বাড়ি ফিরবেন। পুজোর সময় হাজার হাজার লোকশিল্পী কাজ পাচ্ছেন। ছৌ, রায়বেঁশে, পুতুলনাটক ইত্যাদি শিল্পের সঙ্গে বহু প্রান্তিক মানুষ যুক্ত। মোদী সরকার যখন ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ রেখেছে, তখন বাংলা তাঁদের জন্য বিকল্প রুটিরুজির হদিশ দিচ্ছে।