বিশ্বভারতীর হেরিটেজের ফলকে ব্রাত্য রবি ঠাকুর? তোলপাড় শান্তিনিকেতনজুড়ে
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১৭ সেপ্টেম্বর শান্তিনিকেতন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ স্বীকৃতি পেয়েছে, বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবন এবং উপাসনা গৃহের সামনে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের ফলক বসেছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও উপাচার্যের নাম থাকলেও রবীন্দ্রনাথের নাম নেই। যা ঘিরে শান্তিনিকেতনজুড়ে প্রবল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। কোনও বিজ্ঞপ্তি বা অনুষ্ঠান ছাড়া কীভাবে ফলকটির উদ্বোধন হয় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অধ্যাপক, প্রাক্তনী ও আশ্রমিকদের একাংশের মত, ফলকে নিজের নাম লিখে উপাচার্য আত্মপ্রচারের মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। কর্তৃপক্ষ মুখে কুলুপ এঁটেছে।
বৃহস্পতিবার ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের দুটি ফলক বসানো হয়। ঐতিহ্যবাহী রবীন্দ্রভবন ও উপাসনা গৃহের সামনে বসানো ফলকে লেখা হয়েছে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। নীচে আচার্য হিসেবে মোদী এবং উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম নামাঙ্কিত রয়েছে। নেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম। এতেই হতবাক রবীন্দ্র অনুরাগী, বুদ্ধিজীবী, রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ, অধ্যাপক, প্রাক্তনী-সহ পর্যটকরা। অধ্যাপকদের একাংশের মত, নিজের ঢাক পেটানোর জন্য স্থায়ী ফলকটি বসিয়েছেন উপাচার্য। যদিও এই স্বীকৃতির জন্য তাঁর কোনও কৃতিত্ব নেই।
ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের সৌধগুলির যাবতীয় ফলক ও নির্দেশিকা বসানোর কাজ করে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া। কিন্তু এএসআইয়ের কোনও অনুমোদন ছাড়া তাদের হুবহু নকল করে বিশ্বভারতীতে ফলক বসানো হয়েছে। ইউনেস্কোর নিয়মে রয়েছে, নতুন স্থাপত্য নির্মাণের ক্ষেত্রে তাদের অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক। সে’সব নিয়মকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আচার্য ও উপাচার্যর নাম খোদাই করা হয়েছে। উপাচার্যের নির্দেশেই নাকি এমনটা করা হয়েছে, বিশ্বভারতী সূত্রে এমনই জানা যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষ কী করে এমন করতে পারে? তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
অধ্যাপকদের দাবি, বর্তমান উপাচার্য (বিদ্যুৎ চক্রবর্তী) আসার আগেই ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ পাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ক’দিন আগেই বলেন, বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে অবিলম্বে অপসারণ করা উচিত। ফলক উন্মোচন করে সে’বিতর্ক আড়াল করতে চাইছেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, এমনই দাবি অধ্যাপকদের একাংশের। আশ্রমিকরা অনেকেই বলছেন, রবীন্দ্রনাথের নাম বিশ্বভারতী থেকে মুছে ফেলতে চাইছে হালের বিশ্বভারতী প্রশাসন। তাঁরা ফলকটি সংশোধনেরও দাবি জানাচ্ছেন।