পাঁচ দিন ধরে চলে মালদার শতাব্দী প্রাচীন লক্ষ্মী পুজো, কেন জানেন?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মালদার কোঠাবাড়ি এলাকার রায় পরিবারে লক্ষ্মী পুজো প্রায় ১০০ বছরের পুরনো। পুজোর প্রথমদিন সারারাত হয় পুজো এছাড়াও ৫ দিন ধরে চলে লক্ষীপুজো। নিয়ম মেনে পুজোর আগের দিন স্থানীয় তিনশো বিশ মোড়ে বসে মেলা। এই প্রাচীন মেলা ঘিরে উন্মাদনা দেখা গিয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।
রীতি মেনে একটি চালির মধ্যে দেবী লক্ষ্মীর সাথে কার্তিক, গণেশ, সরস্বতী, অন্নপূর্ণা, ব্রহ্মা, নারায়ন, শিব এবং রাম, লক্ষণ পূজিত হন। সবার উপরে ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর। লক্ষ্মীর মাথার ওপরে দুই পাশে রাম ও লক্ষণ । ডানদিকে গণেশ লক্ষ্মী বাঁদিকে থাকেন সরস্বতী, কার্তিক।
অর্থ, সুখ, সৌভাগ্য, শস্য এবং সৌন্দর্যের দেবী লক্ষ্মী। দেবাসুরের সমুদ্র মন্থনের ফলে পাতাল ভেদ করে জন্মেছিলেন, তাই সমুদ্র ও মাটির যাবতীয় সম্পদের দেবী তিনি। স্বত্ত্ব গুণের অধিকারিণী দেবী মাতৃশক্তিরই ধনদা রূপ। পুরাণমতে ভগবান নারায়ণ তাঁর স্বামী। দেবীর বাহন লক্ষ্মী প্যাঁচা। যশ, খ্যাতি, অর্থ এমনকি সন্তান লাভের আশাতেও কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো করেন বাঙালিরা।
জানা গিয়েছে, প্রায় ১০০ বছর আগে স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পুজোর প্রচলন করেছিলেন জমিদার ক্ষিতিশ চন্দ্র রায়। প্রাচীন সেই রীতি মেনে আজও হয়ে আসছে জেলার সর্ববৃহৎ এই লক্ষ্মী পুজো। প্রতিমা নিরঞ্জনের দিন নৌকায় করে দেবী লক্ষ্মীকে পুরাতন মালদার সদরঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর আবার কোঠাবাড়িতে নিয়ে আসা হয় দেবীকে। এরপর মহানন্দা নদীতে দেবীর বিসর্জন দেওয়া হয়।
আজও নিয়ম নিষ্ঠা মেনে পুজো করে আসছেন বর্তমান প্রজন্ম। শোনা যায় এক সময় এই পুজো ঘিরে গম্ভিরা বাউল গানের আসর বসত। ৫ দিন ধরে চলতো বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রতিবছর বিপুল জনসমাগম হয় মালদার ইংলিশবাজারের এই কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোকে কেন্দ্র করে।