দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

পরিবেশবান্ধব উপায়তেই সুন্দরবনের উন্নয়ন! কী কী উদ্যোগ রাজ্যের?

October 29, 2023 | 2 min read

প্রতীকী চিত্র

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পরিবেশবান্ধব উপায়তেই সুন্দরবনের উন্নয়ন করার পথে এগোচ্ছে রাজ্য সরকার। ইচ্ছে মতো যেখানে, সেখানে কংক্রিটের সেতু-পরিকাঠামো নয়। এলাকার চরিত্র অনুযায়ী পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতেই হবে উন্নয়ন।

সেতুর বদলে জেটির পথে হাঁটছে সরকার। সুন্দরবনের দ্বীপগুলি থেকে নৌকোয় করে উৎপাদিত সামগ্রী নিয়ে এসে ভাসমান জেটির মাধ্যমে তা পাড়ে তোলা হবে।বিশেষজ্ঞদের মতে একটি সেতু তৈরি করতে তিন-চার বছর সময় লাগে। ভাসমান জেটি তৈরি হয় ছয় থেকে ন’মাসের মধ্যে। ব্যয় হয় সেতুর খরচের ১০ ভাগের এক ভাগ। জেটি পরিবেশবান্ধবও। বিশেষ পদ্ধতিতে নির্মিত ইটের ব্লক দিয়ে সমুদ্রবাঁধের সুরক্ষা ঢাল তৈরি হবে। পলিস্তরে কিছু অংশে ম্যানগ্রোভ বীজ ছড়িয়ে নিরাপত্তাবলয় তৈরি করার কথা ভাবা হচ্ছে। প্রায় ৪৬০০ কোটি টাকায় সুন্দরবনকে বাঁচানোর রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে।

গত কয়েক বছরে আয়লা, বুলবুল, আমপান, ইয়াসের মতো ঝড় সামলেছে বাদাবন, প্রাকৃতিক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি সেখানকার মাটি লবনাক্ত হয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকাও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। আগামীতেও বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। আমপান, ইয়াসের পরে সুন্দরবনের জন্য যে ‘মাস্টার প্ল্যান’ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তাতেই দ্বিমুখী পদক্ষেপ করছে রাজ্য।

প্রকল্পের অধীনে সুন্দরবনের অনেকগুলি নদী সংস্কারের কাজে মোট ১১২০ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে। ৩৩৬ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা অর্থাৎ মোট সম্ভাব্য ব্যয়ের ৩০% রাজ্যের বরাদ্দ, বাকিটা এডিবি-র ঋণ। বাঁধ পরিকাঠামোসহ মাটিতে জমা নুনের মাত্রা কমাতে বরাদ্দ থাকছে ৩৭৩৫ কোটি টাকা। তার মধ্যে রাজ্যের বরাদ্দ ১১২০ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। বাকিটা বিশ্বব্যাঙ্কের ঋণ। প্রকল্পের সময়সীমা পাঁচ বছর ধরা হয়েছে।

সমুদ্রের জল ঢুকে সুন্দরবনের মাটি লবনাক্ত হয়ে গিয়েছে। অনেকগুলি নদী, খাল-বিল মজে যাওয়ায় মিষ্টি জলের অভাব মিটছে না। যমুনা, বিদ্যাধরী, ওয়ালি, আদিগঙ্গা, পিয়ালী, দক্ষিণ সরস্বতী, কটকুন্তি ও সুতী খাল এবং আরও অনেক খালবিলকে পলিমুক্ত করে মিষ্টি জলের প্রবাহ সুন্দরবনমুখী করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। হুগলি, ইছামতির পাড় ভাঙন রোখার চেষ্টা হবে। নিম্ন বদ্বীপে সমুদ্রবাঁধ সংস্কারের ক্ষেত্রে নেদারল্যান্ডের এক সংস্থার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে রাজ্যের। কংক্রিটের বাঁধের গায়ে ইটের ব্লক বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি করে সেই বাঁধের সুরক্ষা ঢাল হিসাবে দেওয়া থাকবে। প্রকল্পের আওতায় ২৫০ কিলোমিটার বাঁধ প্রস্তুত করা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইতিমধ্যেই বাদাবনের প্রায় ৭০০ কিলোমিটার খাঁড়ির সংস্কার হয়েছে। ফলে বৃষ্টির মিষ্টি জল ধরে রাখা যাবে, পাশাপাশি বন্যার সময় নোনা জলের ভারসাম্য বজায় রাখাও সহজ হবে। খাঁড়ি সংলগ্ন এলাকায় কৃষি, উদ্যানপালন ও মৎসচাষের উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়বে রাজ্য। পণ্য পরিবহণের জন্য পাড় অবধি রাস্তা তৈরি হবে। উৎপাদিত পণ্য সংগ্রহ করে তা বাজারজাত করার দায়িত্ব প্রশাসনের। সব মিলিয়ে সুন্দরবনকে পরিবেশবান্ধব উপায়ে সাজিয়ে তোলার সংকল্প নিয়েছে রাজ্য।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#sundarbans

আরো দেখুন