মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে বিরোধী রাজনীতিকের বুলি বিশ্বভারতীর উপাচার্যের?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: রবিবার উত্তাল হল গোটা বঙ্গ, নেপথ্যে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যায় আটকে থাকেননি উপাচার্য, চিঠিতে সরাসরি রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আসরে নেমেছেন উপাচার্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ২০২৬ সালে ক্ষমতায় থাকা নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এই চিঠি ঘিরেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে তাঁর রাজনৈতিক স্বার্থ নিয়ে।
উপাচার্য চিঠিতে জানিয়েছেন, ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে বিশ্বভারতীর রাস্তা ফেরানোর ব্যাপারে আপনি অত্যন্ত উদাসীন। হেরিটেজ ফলকে রবীন্দ্রনাথের নাম না লেখায় আপনি অত্যন্ত বিচলিত। তবে খুব শীঘ্রই আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার নির্দেশ মেনে নতুন ফলক বসানো হবে।’ উল্লেখ্য, শান্তিনিকেতনের উপাসনা গৃহ সংলগ্ন রাস্তাটি রাজ্য সরকারের অধীনে। ২০১৭ সালে তদানিন্তন উপাচার্য ডঃ স্বপন দত্ত মুখ্যমন্ত্রীকে রাস্তাটি বিশ্বভারতীর হাতে তুলে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী রাজি হয়েছিলেন। যদিও বর্তমান উপাচার্যের আমলে সেই রাস্তাকে কেন্দ্র করে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ ওঠে। তারপরই ফের রাস্তাটির দখল নেয় রাজ্য। সম্প্রতি শান্তিনিকেতন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের স্বীকৃতি পেয়েছে। রাস্তা ফেরত চেয়ে গত ২৫ ও ৩০ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন উপাচার্য। ২৯ অক্টোবর রবিবার তৃতীয় চিঠি দিয়েছেন বিদ্যুৎবাবু। তৃতীয় চিঠির ভাষাকে কেন্দ্র করে উত্তাল রাজনৈতিক মহল।
মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে উপাচার্য লিখেছেন, তাঁর বক্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দ নাও হতে পারে। যাঁরা ধর্নায় বসে আছেন, তাঁরা উপাসনা বা বৈতালিকে অংশগ্রহণ করেন কি না, তাঁদের জিজ্ঞাসা করতে বলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। উপাচার্য আরও লেখেন, মুখ্যমন্ত্রীর অভিজ্ঞ দুই মন্ত্রী জেলে রয়েছে। বিশ্বস্ত সহযোগী (অনুব্রত মণ্ডল) বর্তমানে দিল্লির তিহার জেলে বন্দি। রাজ্যের নিযুক্ত উপাচার্য চাকরির বিনিময়ে অর্থ অপব্যবহারের অভিযোগে জেলে। এক সংসদের জন্য (মহুয়া মৈত্র) এথিক্স কমিটিও গঠন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যদি জনসাধারণের অর্থ লুট করা নৈতিক মনে হয়, তবে উপাচার্যের উদ্বেগ বুঝতে না পারা স্বাভাবিক। ২০২৬ সালে মানুষ না চাইলে আপনি মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন না।
তৃণমূলের মতে, চিঠিটি তো একেবারেই প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০২৬ সালে সরকারে থাকবেন কি না, তা নির্ধারণ করে দিচ্ছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী? রুচিহীন ভাষায় এহেন আক্রমণকে বেনজির হিসেবে দেখছে শিক্ষামহল। শিক্ষক, অধ্যাপকদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বদলে অন্য বিষয়ে মন্তব্য করা উপচার্যের পদমর্যাদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। উল্টে নিন্দনীয়।