পুজো স্পেশাল বিভাগে ফিরে যান

কাঁকসার বনকাঠি গ্রামে শ্মশানকালীর পুজোয় এখনও ‘শবসাধনা’ করা হয়

October 31, 2023 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দেবীপুজো উপলক্ষে নদী থেকে পূত বারি আনার আগে শবসাধনা করা প্রথা। এখনও প্রথা মেনে সদ্য দাহ করা চিতায় বসে সম্পূর্ণ নির্বস্ত্র হয়ে শবসাধনা করা হয় কাঁকসার বনকাটি গ্রামের রায় পরিবারের কালীপুজোয়। পুজো হয় সম্পূর্ণ তান্ত্রিক মতে। আগে নরবলি হত বলে কথিত। বর্তমানে হয় মোষ, ভেড়া এবং পাঁঠাবলি। জঙ্গল কেটে এই বসতি স্থাপিত হয়েছিল বলেই বনকাটি নাম দেওয়া হয়।

রায় পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁকসা থানার জঙ্গল মহলের গড়জঙ্গলে রাজা বল্লাল সেনের কুলগুরু থাকতেন। কুলগুরুর বংশধর রায় পরিবার। যুদ্ধে পরাজিত হয়ে রাজা বল্লাল সেন তাঁর কুলগুরু তথা তান্ত্রিক আচার্য মহেশ্বর প্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে গড়জঙ্গলে বসবাস শুরু করেন। জঙ্গলের পাশে বয়ে চলা অজয় নদের উপর ভরসা করে ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করেন। জলপথেই কাঠ ও কয়লা নিয়ে হওয়া হতো। সেইসময় গড়ের জঙ্গলে অজয় নদের পাশে বনকাটি গ্রাম গড়ে ওঠে। রাজার কুলগুরু মহেশ্বরপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় শ্মশানকালী পুজো শুরু করেছিলেন। শ্মশানকালীর পুজো সম্পূর্ণ করতে ছাগ থেকে মহিষ বলির পাশাপাশি নরবলিও হতো। বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারই রায়বাহাদুর খেতাব অর্জন করেছিল। তখন থেকে বন্দ্যোপাধ্যায়রা পদবি বদলে রায় হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।

ওই গ্রামে বহু পুরনো পাঁচটি শিব ও কালী মন্দির রয়েছে। পঞ্চমুণ্ডীর আসন তারই নিদর্শন বহন করে চলেছে। টেরাকোটার কারুকার্যে ভরা মন্দিরগুলির এখন ভগ্ন দশা। ঐতিহ্যবাহী মন্দিরগুলি সংস্কারের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। রায় পরিবারের সদস্য অনিলকুমার রায় বলেন, পুর্বপুরুষের লেখা পুঁথি পাঠ করে এখনও মা কালীর পুজো হয়।

পুরনো রীতি মেনে পাঁঠা, মেষ ও মোষ বলি দেওয়া হয়। এছাড়া ভক্তরাও পাঁঠা বলি দেন। একসময় নরবলি হতো। সেই রীতি বদলে বর্তমানে বলির শেষে মানব রক্ত নিবেদন করা হয়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#kali puja, #Bankathi village, #West Bengal, #Purba Bardhaman

আরো দেখুন