অশনি সংকেত! কলকাতার বিপদ ডেকে আনছে হুগলি নদী?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: কলকাতার বিপদ ডেকে আনছে হুগলি নদী? গঙ্গার তীরে অবস্থিত মহানগরের একাধিক অংশ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে, নদীর কারণে। ধীরে ধীরে শহরের স্থলভাগে প্রবেশ করছে নদী। তীরবর্তী অংশে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে, ভেঙে পড়েছে নদীতে পাড়। বড়বাজার চক্র রেলওয়ে স্টেশনের কাছেই স্ট্র্যান্ড ব্যাঙ্ক রোডের পাশে অবস্থিত একটি গুদামের মালিক জানান, মহালয়ার কয়েকদিন আগে তার গুদামের পিছন দিকের একটি অংশ নদীতে ভেঙে পড়েছিল। প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ আমল থেকেই এখানে একাধিক গুদাম রয়েছে। বাণিজ্যের কাজেই এগুলো তৈরি করা হয়েছিল।
কাশিপুরের রতন বাবু ঘাটের অদূরের একটি রাস্তা কয়েক মাস আগেই ভেঙে গিয়েছে। ক্রমবর্ধমান ক্ষয়ের জন্য সবুজ ধ্বংস ও নির্মাণকার্যের মাধ্যমে নদী তীর দখলকে দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও নদী ভাঙন একটি প্রাকৃতিক ঘটনা। তবে মানুষের ক্রিয়াকলাপ কলকাতায় নদীর তীরে ভাঙনকে ত্বরান্বিত করছে। তীরবর্তী গুদামঘরের মালিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা, অনেকেই নদীর মধ্যে ও তীরে বর্জ্য, ইট ভর্তি বস্তা এবং অন্যান্য বর্জ্য নদীতে ফেলেন। স্ট্র্যান্ড ব্যাঙ্ক রোড বরাবর একাধিক গুদামের পিছনের দিকের অংশগুলি খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গুদামগুলো থেকে নদীর দূরত্ব দুই মিটারের মধ্যে এসে দাঁড়িয়েছে।
নিমতলা ঘাটের কাছে অনেক জায়গায় নদীর পাড়ের পাথর ভেঙে ভেসে গিয়েছে। কাশিপুরের রতন বাবু ঘাটের কাছে নদীর কয়েক মিটারের মধ্যে একাধিক বাড়ি রয়েছে। তাদের অবস্থান বিপদজনক। বাবুঘাট এবং রতন বাবু ঘাটের মধ্যবর্তী অংশে একাধিক জায়গা ভাঙনের কবলে, নদী ভূখণ্ডের খুব কাছে এসে গিয়েছে। মিলেনিয়াম পার্কের চারপাশের অংশ খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভাঙনের ফলে নিমতলা ঘাট, বিশেষ করে ঘাটের ধাপগুলিও ক্ষতিগ্রস্থ হতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের সেচ দপ্তরের কাছে ক্ষয় নিয়ে চিঠি দিয়েছে পুরসভা। তীরে বোল্ডার পিচিংয়ের মাধ্যমে ক্ষয় রোখা সম্ভব হতে পারে, এমনই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে নদী ক্রমশ অগ্রসর হচ্ছে।
নদী বিজ্ঞানীদের মতে, ভাঙন পুরোপুরি বন্ধ করা না গেলেও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। নদীর ধারে বৃক্ষরোপণ করলে ভাঙন রোধ করা যায়। কিন্তু কী ধরনের বৃক্ষরোপণ করা উচিত তা নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নদী তীর বরাবর কংক্রিট গার্ডওয়াল নদীর নিজস্ব বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস করে দেয়। নদীর তীর পলি ও বালি দিয়ে তৈরি। উপর থেকে অতিরিক্ত ভার চাপালে, নির্মাণের মাধ্যমে তীর দখলের কারণে ভাঙন বাড়ছে।