দেশ বিভাগে ফিরে যান

নির্বাচনী বন্ডের আয়ে দেওয়ালি বিজেপির ঘরেই, ‘উপার্জনের’ শীর্ষে বিজেপি

November 4, 2023 | 2 min read

ছবি সৌজন্যে scroll.in

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তহবিলে কত টাকা জমা পড়েছে, এই তথ্য দুই সপ্তাহের মধ্যে জমা দিতে হবে। জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে বৃহস্পতিবার এমনই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ। নির্বাচনী বন্ডের বিরোধিতায় দায়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই এই নির্দেশ।

নির্বাচনে কালো টাকা রুখতেই নাকি নির্বাচনী বন্ডের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল। এমনই দাবি করা হয়েছিল সরকারের তরফে। তার আগে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে শীর্ষ আদালতকে বলা হয়েছিল, নির্বাচনী বন্ডের তথ্যের বিষয়ে জানার অধিকার নেই আম নাগরিকের। আর গতকাল এই মামলার শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হল, নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে কোন দলের পকেটে কত টাকা ঢুকেছে, দুই সপ্তাহের মধ্যে সেই সংক্রান্ত যাবতীয় হিসেব জমা দিতে হবে।

এই মামলার অন্যতম আবেদনকারী অ্যাসোসিয়েশন অব ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর)-এর তথ্য বিশ্লেষণ করে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর পরিসংখ্যান। দেখা যাচ্ছে, ২০১৮ সালে নির্বাচনী বন্ড চালু হওয়ার পর থেকে রাজনৈতিক দলগুলির অজানা সূত্রে প্রাপ্ত অনুদান বেড়েছে উল্কার গতিতে। ফুলেফেঁপে উঠেছে তহবিল। ২০১৫-১৬ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষ পর্যন্ত সর্বভারতীয় পার্টিগুলির মোট উপার্জনের ৬৬ শতাংশই এসেছিল অজানা সূত্র থেকে। নির্বাচনী বন্ড চালু হওয়ার পর ২০১৯-২০ থেকে ২০২১-২২ আর্থিক বছরে তা একলাফে বেড়ে দাঁড়ায় ৭২ শতাংশে। আর এহেন অজ্ঞাত উৎস থেকে পাওয়া অনুদানে সবচেয়ে বেশি লাভবান স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর দলের ক্যাশবাক্সই। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, কালো টাকা নিয়ে মোদী সরকারের কথায় ও কাজে যে বিস্তর ফারাক, এই পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট।

এডিআরের মতে, উৎস অজ্ঞাত রেখে বার্ষিক অডিট রিপোর্টে ঘোষিত উপার্জনকেই বলা হয় অজানা সূত্রে আসা অনুদান। মূলত নির্বাচনী বন্ড, কুপন বিক্রি, রিলিফ ফান্ড, স্বেচ্ছায় প্রদেয় অর্থ ও বিবিধ উপার্জন সহ বিভিন্নভাবে তা আসতে পারে। অনুদানের পরিমাণ ২০ হাজার টাকার কম হলেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম বা পরিচয় প্রকাশ করার প্রয়োজন পড়ে না। তথ্য বলছে, নির্বাচনী বন্ড চালু হওয়ার আগে ও পরে কংগ্রেসের ঘরে এই খাতে আসা উপার্জনের পরিমাণে বিশেষ বদল হয়নি। কিন্তু বিজেপির ক্ষেত্রে এমন অনুদান ৫৮ শতাংশ থেকে একলাফে ৬৮ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত নির্বাচনী বন্ড থেকে সবচেয়ে বেশি টাকা ঢুকেছে তাদের কোষাগারে, মোট ৫ হাজার ৭২১ কোটি। ওই পাঁচ বছরে ইস্যু হওয়া মোট নির্বাচনী বন্ডের ৫৭ শতাংশই গিয়েছে মোদি-শাহের দলের কাছে। কংগ্রেস পেয়েছে ৯৫২ কোটি টাকা। এটি ইস্যু হওয়া মোট বন্ডের মাত্র ১০.৪ শতাংশ। পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচনী বন্ড থেকে প্রাপ্ত অঙ্ক ৭৬৮ কোটি টাকা। ৬২২ কোটি গিয়েছে বিজেডির ঘরে। ডিএমকে, বিআরএস এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেস পেয়েছে যথাক্রমে ৪৩২, ৩৮৪ ও ৩৩০ কোটি টাকা। একমাত্র সিপিএম এই ব্যবস্থার মাধ্যমে কোনও অনুদান গ্রহণ করেনি। টাকার অঙ্কটা এত বিপুল হওয়ার কারণেই কালো টাকার অভিযোগ উড়িয়ে দিতে পারছে না সর্বোচ্চ আদালত। তাই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, ২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে কোন দল কত টাকা পেয়েছে, সেই তথ্য একটি বন্ধ খামে ভরে জমা দিতে হবে শীর্ষ আদালতে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Bond, #bjp, #Funds

আরো দেখুন