ইডেনের টিকিট কালোবাজারি কাণ্ডে সিএবি প্রেসিডেন্টকে তলব কলকাতা পুলিশের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: টিকিটের কালোবাজারির তদন্তে নেমে এ বার কলকাতা পুলিশ ডেকে পাঠাল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল (সিএবি)-এর সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়কে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার নোটিস পাঠিয়ে স্নেহাশিসকে তলব করা হয়েছিল। নোটিসে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাজিরা দেওয়ার কথা বলা হলেও তিনি হাজিরা দেননি। তাই ফের শুক্রবার তাঁকে নোটিস দিয়েছে লালবাজার।
লালবাজার সূত্রের খবর, ফৌজদারি আইনের ১৬০ ধারায় এই সিএবি কর্তাকে তলব করা হয়েছে। তবে তিনি চাইলে তাঁর কোনও যোগ্য প্রতিনিধিকে পাঠাতে পারেন। যদিও এনিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে, সিএবি প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় দাবি করেছেন, তিনি কোনও নোটিস পাননি। পাশাপাশি, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে অনলাইনে টিকিট বিপনের দায়িত্বে থাকা বহুজাতিক সংস্থার কর্তাদের বৃহস্পতিবার দিনভর দফায় দফায় ময়দান থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
একই সঙ্গে ডাক পাঠানো হয়েছিল অনলাইনে টিকিট বিক্রি করা একটি সংস্থার প্রতিনিধিদের। শুক্রবারই তাঁরা হাজিরা দিয়েছেন ময়দান থানায়। ময়দান এবং এন্টালি, কলকাতা পুলিশের এই দুই থানায় মোট সাতটি এফআইআর হয়েছে সিএবি এবং অনলাইনে টিকিট বিক্রি করা ওই সংস্থার বিরুদ্ধে।
কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের নির্দেশে টিকিট কালোবাজারি কাণ্ডে ঝাঁপিয়ে পড়েছে কলকাতা পুলিশের একাধিক টিম। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে গ্রেপ্তার থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া টিকিটের সংখ্যা। ১ নভেম্বর থেকে কলকাতা পুলিশ সাতটি কেসে এখনও পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। মোট ৯৪টি টিকিট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। শুক্রবার নেতাজিনগর থানার এক মামলায় ৯০০ টাকার টিকিট আট হাজার টাকায় বিক্রি করার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতরা হলেন শুভ্রদীপ ভট্টাচার্য, সুমন সর্দার এবং সন্দীপন লাহা। ধৃতদের কাছ থেকে মোট ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের ১৭টি টিকিট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও সিএবি কর্তারা জানাচ্ছেন, তাঁদের কার্যত কিছু করার নেই। সিএবির সভাপতি স্নেহাশিসের বক্তব্য, ‘‘বিশ্বকাপ আইসিসির ইভেন্ট। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) একটি সংস্থাকে অনলাইনে টিকিট বিক্রি করার দায়িত্ব দিয়েছে। সিএবি শুধু ম্যাচের আয়োজক। আমরাও টিকিট পেয়েছি অনলাইনে টিকিট বিক্রি করা ওই সংস্থার মাধ্যমে। চাহিদার তুলনায় অনেক কম টিকিট পেয়েছি আমরা। ফলে ক্লাব, অনুমোদিত সংস্থা, সদস্যদের নির্ধারিত কোটা কমাতে হয়েছে।’’
প্রায় একই কথা শোনা গিয়েছে বিসিসিআইয়ের প্রাক্তন সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখেও। তিনি বলেন, ‘‘ভারতের খেলার টিকিটের চাহিদা প্রচুর। সবাই খেলা দেখতে চান। কিন্তু স্টেডিয়ামের আসন সংখ্যা নির্দিষ্ট। তাই সবাই টিকিট পাবেন না এটাই স্বাভাবিক। চাহিদা প্রবল বলেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’’
কলকাতায় ম্যাচের টিকিট নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই বিক্ষোভ চলছে। ক্রিকেটপ্রেমীদের অভিযোগ, অনলাইনে যে সংস্থা বিশ্বকাপের ম্যাচগুলির টিকিট বিক্রি করছে তাদের পাশাপাশি, সিএবি এবং বিসিসিআই কর্তারা টিকিট সরিয়ে দিয়েছেন। সেই টিকিট কালোবাজারে চলে গিয়েছে।