দিলীপ ঘোষের ‘জোশে’ রাশ টানতে চাইছে বঙ্গ বিজেপি?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দিলীপ ঘোষের ‘জোশে’ রাশ টানতে চাইছে বিজেপি! এমনিতেই মুষলপর্ব চলছে বঙ্গ বিজেপির অন্দরমহলে। পরের পর ভোটে পরাজয় থেকে পার্টি অফিসের কোন্দল কার্যত খোলা বাজারে নেমে এসেছে। দলবদলুদের হাতে চলে যায় পদ্ম-পার্টির রাশ। কলকাতার হেড কোয়ার্টার ছেড়ে সল্টলেকে উঠে যায় পার্টি অফিস। অলিখিতভাবে কর্মী-সমর্থকদের জন্য কিন্তু সেই অফিসের দরজা বন্ধ। রাস্তার পরিবর্তে বঙ্গ বিজেপির উপস্থিতি বেশি ধরা পড়ে ফেসবুক-ট্যুইটারে। দলের এই ‘ক্ষয় রোগ’ উপশমে বসে যাওয়া অভিজ্ঞ কর্মী-নেতাদের পক্ষে বারবার সওয়াল করেছেন দিলীপবাবু।
গেরুয়া অক্ষে নিজের ‘অনুগামী’দের নিয়ে এবছর ঘটা করে বিজয়া সেরে ফেলেন মেদিনীপুরের সাংসদ। পুরনো কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে পার্টির ‘আদি’ সদর দপ্তরে জলযোগ সহকারে বিজয়া সারেন দিলীপ। কর্মী-সমর্থকদের ভিড়ে ভুলতে বসা ৬ মুরলী ধর সেন লেনের অফিস সেদিন গমগম করছিল। ওই অনুষ্ঠানে ওঠা স্লোগান ‘হাউ ইজ দ্য জোশ! দিলীপ ঘোষ, দিলীপ ঘোষ’ বর্তমান রাজ্য নেতৃত্বকে ‘অস্বস্তি’তে ফেলে। এই বিজয়ায় সম্মলনের জন্য দলের কোনও অনুমতি ছিল না।
কয়েক মাস আগে থেকেই রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক কাজ পরিচালনা হচ্ছে সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের একটি বাড়ি থেকে। ভাড়া নেওয়া বাড়িতেই তৈরি হয়েছে রাজ্য দফতর। রাজ্য নেতাদের আলাদা আলাদা ঘরও রয়েছে সেখানে। সেই সঙ্গে দলের সব ক’টি মোর্চার জন্যও রয়েছে ঘর। অন্য দিকে, ঠিক হয়েছে পুরনো দফতরে তৈরি হবে রাজ্য দলের ‘কল সেন্টার’। এর পাশাপাশি কলকাতা উত্তর লোকসভা এলাকা নিয়ে যে জেলা, তারও দফতর থাকবে মুরলীধর সেন লেনের ওই বাড়িতে। এখন সেই সংস্কারের কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই উপরের দিকের অনেক ঘর ভেঙে কাজ চলছে। অস্থায়ী ভাবে দফতর সামলাচ্ছেন কলকাতা উত্তরের জেলা সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ। বাকি কোনও নেতার জন্যই আর ঘর নেই। তবে অক্ষত রয়েছে একতলার হল ঘরটি। সেখানে এখনও মাঝে-মধ্যে সাংবাদিক বৈঠক হয়।
কার্যত দিলীপ ঘোষের মতো অভিজ্ঞ নেতার নেতৃত্বে হওয়া ওই বিজয়াকে ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠছে। এরপরই রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেয় ওই হলঘর এবার থেকে তালাবন্ধই থাকবে। মানে আগে সবসময়ই খোলা থাকত ওই হলঘর। এবার থেকে আগাম অনুমতি নিলেই তবে হলঘর খোলা হবে। মূলত লোকসভা ভোটের আগে দলের অন্দরে শৃঙ্খলা ফেরাতে চাইছে গেরুয়া শিবির। সেকরণেই এই উদ্যোগ। মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে দিলীপ ঘোষের গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বকে ঘিরেও নানা সময় নানা প্রশ্ন উঠেছে। তবে কি দিলীপের জোশকে দমাতেই হলঘরে তালা পড়ে গেল? দিলীপ-অনুগামীরা বলছেন, ‘আদি’দের ‘জোশ’ দেখেই ভয় পেয়ে গিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব। দিলীপের অনুষ্ঠানে হাজির থাকা এক আদি নেতার বক্তব্য, একটা কবিতা মনে পড়ছে। রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, দ্বার বন্ধ করে দিয়ে ভ্রমটারে রুখি। সত্য বলে, আমি তবে কোথা দিয়ে ঢুকি?