দশমহাবিদ্যার দশটি রূপ কী কী?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ব্রহ্মা, প্রজাপতি দক্ষকে জগতের অধিপতি করে দেন। গর্বিত হয়ে দক্ষ প্রজাপতি মহাযজ্ঞের আয়োজন করেন। যজ্ঞে ত্রিলোকের সকলকে তিনি নিমন্ত্রণ করেন। জামাই মহাদেব এবং মেয়ে সতীকে তিনি নিমন্ত্রণ করেননি। সতী মহাযজ্ঞের খবর পেয়ে বিনা নিমন্ত্রণে সেখানে যাওয়ার জন্য স্বামীর অনুমতি চান। অনুমতি না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন তিনি। ক্ষমতা দেখানোর জন্য স্বমূর্তি ত্যাগ করে দেবী ভগবতী দশদিকে দশমূর্তিতে আবির্ভূত হয়ে মহাদেবের পথ অবরুদ্ধ করেন। এই দশ মূর্তিকে দশমহাবিদ্যা বলা হয়।
কালী:
দশমহাবিদ্যার প্রথম রূপ হল কালী। চার হাতের ডান দিকের হাতে থাকে খঙ্গ ও চন্দ্রহাস। বাম দিকের হাতে চর্ম ও পাশ। গলায় নরমুণ্ড, দেহ পশু চর্ম আবৃত।
তারা:
দশমহাবিদ্যার দ্বিতীয় রূপ হল তারা। গাত্রবর্ণ নীল, ব্যাঘ্র চর্ম পরিহিতা। দেবীর চারটি হাত। বাম পা থাকে শিবের বুকের উপর।
ছিন্নমস্তা:
দশমহাবিদ্যার তৃতীয় রূপ হল ছিন্নমস্তা। দেবীর এই রূপই সব থেকে ভয়ঙ্কর। বাম হাতে তিনি ধরে থাকেন নিজ মুণ্ড এবং গলা থেকে নির্গত রক্তের স্রোত তিন ধারার মধ্য মাঝের ধারা সেই ছিন্ন মস্তকে পান করছেন। বামে মহচরী ডাকিনী ও ডানে সহচরী বর্ণিনী বাকি দুই রক্তধারা পান করছেন। সবাই দিগম্বরী, মুণ্ডমালিনী ও মুক্তকেশী।
ষোড়শী:
দশমহাবিদ্যার চতুর্থ রূপ হলো ষোড়শী। তারা রূপ ত্যাগ করে মহাদেবের সামনে আবির্ভূত হয়েছিলেন ষোড়শী রূপে। ষোড়শীর অপর নাম স্ত্রী বিদ্যা।
ভুবনেশ্বরী:
দশমহাবিদ্যার পঞ্চম রূপ ভুবনেশ্বরী। তন্ত্রশাস্ত্রে জানা যায়, মহাদেবের উপর অভিমান ও রাগে দেবী ষোড়শী এই রূপ ধারণ করেছিলেন। শিবের বক্ষে নিজের এই নতুন রূপের ছায়া দেখে নিজেই ভীত হন। পরে সেই ছায়া নিজের জেনে স্থির হন। দেবীর চার হাতে অস্ত্র ও বরাভয় মুদ্রা।
ভৈরবী:
দশমহাবিদ্যার ষষ্ঠ রূপ দেবী ভৈরবী। দেবী চতুর্ভুজা, হাতে অক্ষমালা নিয়ে দেবী অস্ত্রহীনা। দেবী বিদ্যা ও ধনদাত্রী।
ধূমাবতী:
দশমহাবিদ্যার সপ্তম রূপ দেবী ধূমাবতী। কৈলাশে একদিন পার্বতী ক্ষুধায় কাতর হয়ে শিবের কাছে অন্ন চান। কিন্তু ঘরে ছিল না চাল। ক্ষুধার জ্বালায় ক্ষিপ্ত হয়ে শিবকে গ্রাস করে ফেলেন দেবী। সঙ্গে সঙ্গে দেবীর দেহ হতে ধোঁয়া নির্গত হতে থাকে। সেই ধোঁয়া পার্বতীকে বিবর্ণ করে দেয়।শিব বলেন, দেবী যখন ক্ষুধায় শিবকে গ্রাস করেছেন তখন দেবী বিধবা হয়েছেন। ধূমাবতী বিধবা, শিবহীনা, ধূমাবতীর দুই হাত। একহাতে কুলা ও অন্য হাতে থাকে ধর।
বগলা:
দশমহাবিদ্যার অষ্টম রূপ বগলা। রুরু দৈত্যের পুত্র দুর্গম দেবতাদের চেয়ে বলশালী হওয়ার জন্য ব্রহ্মার তপস্যা করে বরপ্রাপ্ত হন। দেবতারা দেবী ভগবতীর আরধনা করলে দেবী আর্বির্ভূত হয়ে যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। দেবীর গায়ের বর্ণ পীত। বসন পীত বর্ণ। দ্বিভূজা দেবী বাম হাতে দুর্গমে জিহ্বা ধরে ডান হাতে গদা দিয়ে শত্র দমন করেন।
মাতঙ্গী:
দশমহাবিদ্যার নবম রূপ হল মাতঙ্গী। দেবী শ্যামবর্ণা, ত্রিনয়না, চতর্ভূজা ও সিংহাসনে উপবিষ্টা।
কমলা:
দশমহাবিদ্যার শেষ রূপ হল ঐশ্বর্য লক্ষ্মী কমলা। সমুদ্র মন্থনের সময় তাঁর জন্ম। দেবী চতুর্ভূজা।