কৌশিকী অমাবস্যায় তারা মায়ের দর্শন পেয়েছিলেন সাধক বামাক্ষ্যাপা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আজ কৌশিকী অমাবস্যা। তন্ত্রমতে এই তিথিটির গুরুত্ব অপরিসীম। দেবী কৌশিকী ছিলেন অযোনিসম্ভবা। তিনিই শুম্ভ ও নিশুম্ভকে বধ করেছিলেন। যুদ্ধের সময়ে দেবী কৌশিকীর শরীর বা কোশ থেকে হাজারও যোদ্ধৃ মাতৃকাকুল সৃষ্ট হয়। তারাই সমগ্র অসুরকূলকে বিনাশ করে। কোশ থেকে উৎপন্ন হওয়ায় দেবীর আরেক নাম হয় কৌশিকী। ঘটনাটি ঘটেছিল ভাদ্র অমাবস্যায়। পরবর্তীকালে এই তিথিটি কৌশিকী অমাবস্যা তিথি নামেই পরিচিতি পায়।
মা তারা হলেন দশ মহাবিদ্যার দ্বিতীয় মহাবিদ্যা, তিনিই কৌশিকীর আরেক রূপ। মার্কণ্ডেয় পুরাণ অনুযায়ী, এক সময় মহিষাসুরের অত্যাচারে দেবতারা অতিষ্ট হয়েছিলেন। সেই সময় দেবী দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করেন৷ কিন্তু তাতেও চিরস্থায়ী শান্তি ফেরেনি। সাধনার মাধ্যমে ব্রহ্মাকে তুষ্ট করেছিলেন শুম্ভ-নিশুম্ভ। সাধনায় মুগ্ধ হয়ে ব্রহ্মা বরও দিয়েছিলেন। সেই কাহিনীই আমরা মহালয়ার দিন ভোরে শুনি। ব্রহ্মার বরে বলিয়ান হয়ে অত্যাচার শুরু করে শুম্ভ- নিশুম্ভ, দুই অসুরের অত্যাচারে দেবতারা আবার অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। এরপর সব দেবতারা মিলে দেবী পার্বতীর স্মরণাপন্ন হলে দেবতাদের রক্ষা করতে মা মহামায়া তাঁর ইচ্ছাশক্তি জাগ্রত করে, কোশ হতে এক দেবীমূর্তির জন্ম দেন। সেই দেবীই মা কৌশিকী। কৌশিকী অমাবস্যা তিথিতেই কৌশিকী রূপে মা তারা শুম্ভ- নিশুম্ভকে দমন করেছিলেন। সেই থেকেই তিথিটির নাম হয় কৌশিকী অমাবস্যা।
কথিত আছে সাধক বামাক্ষ্যাপা, ১২৭৪ বঙ্গাব্দে কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠ মহাশ্মশানে শ্বেতশিমূল বৃক্ষের তলায় সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। ধ্যানমগ্ন বামাক্ষ্যাপা ওইদিনই তারা মায়ের দর্শন পান।
এবার শুক্রবার দুপুর থেকেই অমবস্যা লাগবে। যা দিনভর থাকবে। কৌশিকী অমাবস্যার দিন হিসেবে অনেকেই শনিবারকে চিহ্নিত করছেন। কারণ এবারের অমাবস্যা তিথিতে শনিবার শিবযোগ রয়েছে। জনশ্রুতি রয়েছে, রীতি নীতি মেনে আজকের দিনে অর্থাৎ ভাদ্রমাসের এই তিথিতে পুজো করলে সুফল পাওয়া যায়। কথিত আছে, এদিন পুজো করলে মন বাসনা পূর্ণ হয়। সেই কারণেই তারাপীঠে ভিড় উপচে পড়েছে।