বিষ্ণুপুরে উৎসবের আমেজ, রাসে মাধবগঞ্জ ও কৃষ্ণগঞ্জ মন্দিরে ভক্তদের ঢল
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: রাস উপলক্ষ্যে গোটা বিষ্ণুপুর জুড়ে উৎসবের মেজাজ। রাসে বিষ্ণুপুরের মাধবগঞ্জ ও কৃষ্ণগঞ্জ মন্দিরে দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা ভিড় করেন। এই সময় বিষ্ণুপুর শহরে একযোগে, ৫২ জোড়া দেব-দেবী দর্শনের সুযোগ পাওয়া যায়। মল্লরাজ বীরহাম্বিরের রাসমঞ্চের অনুকরণে ৫২জোড়া দেবদেবী আজও শহরের দুই মন্দিরে রাসলীলায় অংশ নেন। পাঁচদিন ধরে উৎসবে মেতে ওঠেন এলাকাবাসী।
মাধবগঞ্জ মদনগোপালজিউ মন্দিরের মদনগোপাল জিউ ছাড়াও রামদনগোপাল, মদনমনোহর, মুরলীমোহন, রাধাজীবন, নাড়ুগোপাল, গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু, রাধাবিনোদ, জগন্নাথ, কালাচাঁদ, রসিকনগর, বেণীমাধব, যুগলকিশোর, মহাপ্রভু প্রভৃতি দেবদেবীকে আনা হয়। সন্ধ্যারতি পর প্রতিদিন লোকসঙ্গীত, বাউল প্রভৃতি অনুষ্ঠান হয়। কৃষ্ণগঞ্জ রাধালালজিউ মন্দিরের রাধালালজিউ, কৃষ্ণলালজিউ ছাড়াও গোবিন্দজিউ, গৌর নিতাই, দামোদরজিউ, রাধারমনজিউ প্রভৃতি বিগ্রহ আসে। পাঁচদিন ধরে মন্দির প্রাঙ্গণেই তাঁরা থাকেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ভক্তদের জন্য ভোগের ব্যবস্থা করা হয়।
মল্লরাজ বীরহাম্বির বৈষ্ণব ধর্ম গ্রহণ করার পর, তাঁরই অনুপ্রেরণায় বিষ্ণুপুরের বিভিন্ন এলাকায় বহু মন্দির স্থাপিত হয়। পরবর্তীকালে বিভিন্ন মন্দিরের অধিষ্ঠাত্রী দেবদেবীকে এনে ঐতিহাসিক রাসমঞ্চ স্থাপন করা হয়। যা আজ হেরিটেজের মর্যাদায় আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষের অধীনে। ঐতিহ্য ধরে রাখছে কৃষ্ণগঞ্জ ও মাধবগঞ্জ ষোলোআনা কমিটি। প্রতিবছর দুই মন্দিরের দাওয়ায় ৫২জোড়া দেবদেবীকে সাজিয়ে প্রদর্শন করা হয়। দেবদেবীর দর্শন পেতে ভক্ত ও দর্শনার্থীরা ভিড় জমান। উৎসব উপলক্ষ্যে মাধবগঞ্জে মেলা বসে। এছাড়াও দুই মন্দির প্রাঙ্গণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
জানা গিয়েছে, কৃষ্ণগঞ্জে রাধালালজিউ মন্দিরে ১৬ জোড়া এবং মাধবগঞ্জ মদনগোপাল জিউ মন্দিরে ৩৬ জোড়া দেবদেবী আসেন। দূর দূরান্তের মন্দির থেকেও দেবদেবী রাসলীলায় অংশ নেন। প্রত্যেক দেব-দেবীকে আপ্যায়ন করা হয়। প্রতিদিন সন্ধ্যারতি ও বিশেষ পুজো করা হয়। অতিথি দেবদেবীদের যত্নের কোনও ত্রুটি রাখা হয় না।