রাস পূর্ণিমায় রসপুরে হয় লক্ষ্মী নারায়ণ পুজো, পরের দিন বিজয়া
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: মূলত বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীরা রাস উৎসব পালন করেন। বৈষ্ণবীয় ভাবধারায় শ্রীকৃষ্ণের প্রকৃতির উৎসবই রাস। এই বিশেষ উৎসবে গোপিনীদের সহযোগে রাধাকৃষ্ণের প্রার্থণা করা হয়। পুরাণে রাস উৎসবের উল্লেখ আছে। তবে এক্ষেত্রে রয়েছে বিভিন্ন মতভেদ।
অনেকে মনে করেন, ঈশ্বরের সঙ্গে আত্মার মহামিলনই রাস। পুরাণে শারদ রাস ও বসন্ত রাসের উল্লেখ পাওয়া যায়। আবার মনে করা হয় ‘রস’ থেকেই এসেছে ‘রাস’। যেটি সনাতন ধর্মালম্বীদের একটি বাৎসরিক উৎসব। শ্রীকৃষ্ণের ব্রজলীলার অনুকরণে বৈষ্ণবীয় ভাবধারায় অনুষ্ঠিত ধর্মীয় উৎসব।
হাওড়া জেলার আমতা থানার একটি গ্রাম হল রসপুর। কথায় আছে, ‘রসপুর গ্রামে রায়ে খাঁয়ে বাস।’ আনুমানিক ৪৮৩ বছর আগে সম্রাট শের শাহের আদেশে বর্ধমান থেকে কয়েকজন রাজকর্মচারীর সঙ্গে যশশচন্দ্র রায় রসপুরে এসে পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। তাঁর আমল থেকে রসপুর রায় পাড়ায় রাধাকান্ত মন্দিরে আড়ম্বরের সহিত রাস উৎসব পালিত হয়ে আসছে। এই পুজোর জন্যই গ্রামের নাম হয় রাসপুর। যেটা লোকমুখে রসপুর হয়ে গিয়েছে।
এখানকার বাসিন্দারা জানান, এই এলাকার সাংস্কৃতিক কাজকর্ম প্রথম শুরু করেছিল বালক সঙ্ঘ। সেই ক্লাবের বয়স ৯০ বছরেরও বেশি। আশির দশকের কোনও একসময় পাড়ার কয়েকটি বালক কালী ঠাকুরের পুজো করতে উদ্যোগ নিয়েছিল। তবে ক্লাবের সদস্যরা সেই উদ্যোগ আটকে দেয়। সেই বালকরা কালীপুজো না করে লক্ষ্মী নারায়ণ পুজো শুরু করে। সেই পুজো এখন করছে ফাইভ চ্যালেঞ্জার্স নামে একটি সংগঠন। রসপুরের রায়পাড়ার রাধাকান্ত মন্দিরের প্রাচীন রাসপুজোকে অনুসরণ করে রাস পূর্নিমার পূর্ণ তিথিতে এখানে লক্ষ্মী নারায়ণ পুজো হয়। এই পুজো ৪০ বছরে পা দিল। বিনোলা গ্রামের শিল্পী এখানকার প্রতিমা তৈরি করেন। পুজোর দিন সংগঠনের সদস্যরা নির্জলা উপবাস করেন। রাতে প্রসাদ খেয়ে ভঙ্গ করেন উপবাস। পুজোর পরের দিন বিজয়া। প্রতিমা বরণের সময় সিঁদুর খেলার পর দামোদর নদীতে প্রতিমা বির্সজন হয়।