রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

গেরুয়া রং করতে হবে! কেন্দ্রের ফতোয়ায় বিপাকে রাজ্যের সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলি

November 28, 2023 | 2 min read

কেন্দ্রের ফতোয়ায় বিপাকে রাজ্যের সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলি

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১০০ দিনের কাজ, আবাস, স্বাস্থ্য প্রতিটি ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের ফতোয়া এবং অবরোধ গলার কাঁটা হয়ে উঠছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে। এবার রাজ্যে ৪৭৪টি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরি হয়ে যাওয়ার পরও মিলছে না কেন্দ্রের টাকা। ছ’মাস আগে তৈরির খরচ স্বাস্থ্যমন্ত্রককে পাঠালেও সেই টাকা আসেনি। ফলে তালাবন্ধ হয়ে পড়ে আছে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলি অধিকাংশ। যে কটি খোলা রয়েছে, সেগুলিতে দুবেলা ঝাঁট দেওয়ারও লোক নেই। প্রশ্ন উঠছে এবার কি গাছতলায় বসে চিকিৎসা করতে হবে রাজ্যের চিকিৎসক-নার্সদের?

রাজ্যের অভিযোগ, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষ শেষ হওয়ার আগেই তেলেঙ্গানা, পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, মণিপুর-সহ ১৩ রাজ্যকে চিঠি ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট’ (তৈরির খরচ) ছাড়া প্রাপ্য মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের ক্ষেত্রে আটকে রাখা হয়েছে খরচের টাকা। যার অঙ্ক ৮২৬.৭২ কোটি টাকা। আটকে রাখা হয়েছে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের বকেয়া তিন হাজার কোটি টাকা।
সম্প্রতি অর্থ কমিশনের আধিকারিকদের সঙ্গে তিন দফায় বৈঠকে করেছিলেন রাজ্যে আধিকারিকরা। কিন্তু কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি।

শুরুতে কোনও শর্ত না দিলেও ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে অর্থ কমিশন অন্তত একডজন শর্ত চাপিয়ে দেয়। প্রথমেই বলা হয়, সুস্বাস্থ্যক কেন্দ্রের রং বদল করে গেরুয়া করতে হবে। অসংক্রামক ব্যাধির চিকিৎসার জন্য ছ’টি বৃত্ত করে রোগের নাম লিখতে হবে। ততদিনে প্রায় ৩৫০ সুস্বাস্থ্যর কেন্দ্র তৈরি পূর্ণ। স্বাস্থ্যামন্ত্রকের পরিদর্শক দল বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে যে রিপোর্ট দেয় তা মানতে গেলে ভেঙে নতুন করে ভবন করতে হবে। পশ্চিমবঙ্গ-সহ সব অবিজেপি রাজ্যলগুলি বিরোধিতা করে।

২৫ নভেম্বর, শনিবার দেশের ১ লক্ষ ৬০ হাজার ‘আয়ুষ্মান ভারত-হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার’ তথা সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নাম পাল্টাতে দেশের সব রাজ্যকে চিঠি পাঠিয়েছে মোদী সরকার। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের শীর্ষকর্তা এল এস চাংসান প্রতিটি রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবকে পাঠিয়েছেন সেই চিঠি। তাতে বলা হয়েছে, সব সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র, তথা হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টারের নতুন নাম হবে ‘আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির’। তাতে থাকবে ট্যাগলাইন— ‘আরোগ্যম পরম ধনম’। ৩১ ডিসেম্বর, অর্থাৎ আর এক মাসের মধ্যে এই কাজ শেষ করতে হবে। ইংরেজি বা দেবনাগরী ছাড়াও আঞ্চলিক ভাষায় অনুবাদ করে এই নাম লেখা যেতে পারে। তবে কোনওভাবেই রাজ্য সরকার নিজের পছন্দ মতো নাম দিতে পারবে না। তাতে যদি সেই রাজ্যের সাধারণ মানুষের বুঝতে সুবিধা হয়, তাহলেও নয়। নয়া নামকরণের জন্য রাজ্যগুলি স্বাস্থ্যকেন্দ্র পিছু পাবে ৩ হাজার টাকা। যদি ভাড়ার বাড়িতে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র চলে, সেক্ষেত্রে ফ্লেক্সে এই নামের ব্র্যান্ডিং করতে হবে। তবে শুধু নতুন নামকরণ করলেই হবে না। তার ছবি আপলোড করতে হবে আয়ুষ্মান ভারত হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার পোর্টালে।

ফলত, কয়েকটি সুস্বাস্থ্যা কেন্দ্রের রং কিছুটা বদল হলেও প্রায় সব কেন্দ্রে অন্যন শর্ত মানা হলেও রং বদল হয়নি। এক কর্তার কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় স্বাস্থয হমন্ত্রক সুস্বাস্থ্য‌ কেন্দ্র বাড়ির রং নিয়ে প্রশ্ন না তুললেও অর্থ কমিশন কিন্তু নিজেদের অবস্থান থেকে নড়তে নারাজ। ফলে, একের পর এক বৈঠকই সার। কেন্দ্র-রাজ্যের এই টানাপোড়েনে বিপাকে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। ভিড় বাড়ছে ব্লক হাসপাতালও প্রথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #bjp, #Swasthya Bhaban, #saffron, #Health centres

আরো দেখুন