ওড়িশায় বিজেডি’তে বিদ্রোহের শঙ্কা, ওত পেতে রয়েছে বিজেপি
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: নরেন্দ্র মোদী মসনদ দখলের পর নবীন পট্টনায়েক নতুন এক রাজনৈতিক ফর্মুলা নিয়েছেন। যেটি পরবর্তীকালে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগন্মোহন রেড্ডি অথবা তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও অনুসরণ করেছেন। সেটি হল, কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কোনও প্রত্যক্ষ বিরোধে না যাওয়া। আবার এনডিএ বা ইউ পি এ—কোনও জোটেই না থাকা। নিরপেক্ষ দেখিয়ে আদতে সংসদে কেন্দ্রকে বিল পাশ করানোয় সহায়তা করা। এর সুফল হিসেবে এতদিন ধরে নবীনবাবুকে সরাসরি কোনও রাজনৈতিক আক্রমণ করেননি মোদী। কিন্তু অবশ্যই তাঁর গোপন এজেন্ডা হল, বিজু জনতা দলকে দুর্বল করে ওড়িশায় ক্ষমতা দখল। এতদিন সেই আশা ফলপ্রসূ হয়নি।
কিন্তু বিজু-পুত্রের ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা এবং গরিবমুখী প্রকল্প বিজেডিকে অপ্রতিরোধ্য করে তুলেছে ওড়িশায়। গত ২৬ বছর ধরে শুধুই বিজেডি’র উত্থানের ইতিহাস। কিন্তু এবার বিজেডি’র মধ্যে বিদ্রোহের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ, নবীন পট্টনায়েক দলের রাজনৈতিক নেতৃত্বে নিজের উত্তরাধিকারি বাছাই করছেন। ঘনিষ্ঠ ও পছন্দের আইএএস অফিসার ভি কে পান্দিয়ানকে নিয়ে অনেকদিন ধরেই জল্পনা চলছে। ওই অফিসারই আগামী দিনে নবীন পট্টনায়কের উত্তরসুরি এরকমই চর্চা চলছে। এবার সরাসরি সেই পান্দিয়ান চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে বিজু জনতা দলে যোগ দিলেন। আনুষ্ঠানিক যোগদান সম্পন্ন হল সোমবার। আর নবীন পট্টনায়েক জানিয়ে দিলেন, এতদিন ধরে আইএএস অফিসার হিসেবে যেভাবে পান্দিয়ান মানুষের সেবা করেছেন, এবার সেইভাবে দলের মুখ হিসেবে আমজনতার সুখ-দুঃখের সাথী হবেন। বিজু জনতা দলের পক্ষ থেকেও এদিন বলা হয়েছে, নবীন পট্টনায়েকের স্বপ্নকেই এগিয়ে নিয়ে যাবেন পান্দিয়ান। অর্থাৎ, কার্যত ঘোষণাই করে দেওয়া হল, পান্দিয়ানই আগামী দিনে দলের নেতা। নবীন পট্টনায়েকের এই সিদ্ধান্তের পর প্রশ্ন উঠছে বিজু জনতা দল কি ঐক্যবদ্ধ থাকবে? কারণ নবীনকে একচ্ছত্র নেতা হিসেবে গ্রহণ করতে দলের সমস্যা নেই। কিন্তু একজন সরকারি অফিসার দলের নেতৃত্বে বসে গেলে সেটা কি সকলে মেনে নেবে? বিদ্রোহ হবে না তো? জল্পনা শুরু হয়েছে।
আর এই জল্পনা শুরু হতেই মাঠে নেমে পড়েছে বিজেপি। ওড়িশায় কংগ্রেস দীর্ঘদিন ধরেই দুর্বল। বিজু জনতা দল বনাম বিজেপির মধ্যেই প্রধান লড়াই। ওড়িশাজুড়ে সঙ্ঘ পরিবারের উগ্র হিন্দুত্বের এজেন্ডা ছড়িয়েও নবীন পট্টনায়েককে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারেনি বিজেপি। তাই এবার নবীন পট্টনায়েকের দলে বিদ্রোহের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায়, সেই সুযোগ নিতে মরিয়া মোদী-শাহরা। তারা শিকারির মতো ওত পেতে রায়েছে বিজেডি’র বিদ্রোহীদের দলে নেওয়ার জন্য।