৪৬৩ বর্ষে পদার্পণ করল ময়নাগড়ের রাসযাত্রা, বসেছে মেলা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নাতেও মহাধুমধামে পালন করা হয় রাস উৎসব। ময়নাগড়ের রাসযাত্রা এ বছর ৪৬৩ বর্ষে পদার্পণ করল। এই রাসমেলা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রাচীনতম ও বৃহত্তম মেলা।
কুলদেবতা শ্যামসুন্দর জিউর রাসযাত্রার মূল আকর্ষণ হল শ্যামসুন্দর জিউ নৈশরাস যাত্রা। পূর্ণিমার সন্ধ্যা রাতে রাজপরিবারের কুলদেবতা শ্যামসুন্দর জিউ কালীদহ পরিখার জলে নৌকা যাত্রা করেন, যা হাজার হাজার মানুষ দর্শন করে আনন্দ উপভোগ করেন। ময়নার রাসমেলার জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে থাকেন ময়না থেকে শুরু করে জেলার অন্যান্য জায়গার মানুষও।
পুরনো রীতি মেনে শুক্রবার ভোরে একাদশী তিথিতে রাজ পরিবারের কুলদেবতাকে সুসজ্জিত ও আলোক মালায় সাজানো নৌকায় চাপিয়ে রাসমেলা প্রাঙ্গণে আনা হয়। তখন থেকেই ময়নাগড়ের রাসযাত্রার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। রাসযাত্রার সঙ্গে রয়েছে মেলাও। সোমবার পূর্ণিমা তিথিতে এই মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। এদিন বিকেলে বিডিও অফিস প্রাঙ্গণ থেকে সুসজ্জিত ট্যাবলো মেলা প্রাঙ্গণ অবধি আসে। তারপর সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার উদ্বোধন হয়। প্রশাসন, পুলিস ছাড়াও বিশিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। আগামী ১৫দিন ধরে এই মেলা চলবে। তবে, রাসযাত্রা আটদিনে ব্যাপী হয়।
ময়না বাজার এলাকায় যানজট এড়াতে শ্রীরামপুর ব্রিজের সংযোগকারী রাস্তা থেকে উড়ালপুলের ধাঁচে ব্রিজ তৈরি হয়েছে। সেই ব্রিজের নীচে বিরাট এলাকাজুড়ে বসেছে মেলা। সোমবার থেকেই কয়েকশো স্টলে বিকিকিনি পুরোদমে শুরু হয়েছে। এদিন দুপুরে মেলা প্রাঙ্গণে দেখা যায়, মন্দিরে শ্যামসুন্দর জিউর পুজো হচ্ছে। মন্দিরের সামনে সর্বক্ষণ ভক্তদের ভিড়। মন্দিরের পুরোহিতরা অনবরত বাতাসা হরিলুট করে চলছেন। মেলা উপলক্ষ্যে পরিখা পারাপারের জন্য একটি নৌকা রাখা আছে। ২০টাকা ভাড়া দিয়ে নৌবিহার করে ময়নাগড়ে অর্থাৎ রাজ পরিবারে পৌঁছে যাওয়ার সুযোগ। ময়নার রাসমেলায় গিয়ে অনেকে কদমা কেনেন। এত বড় সাইজের কদমা আর কোনও মেলায় দেখা যায় না। এবার সেই কদমা ১৩০টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। রাস উৎসবে বাজি পোড়ানো একটি পুরনো ঐতিহ্য। ভক্তরা মানত করে এই বাজি দান করেন। পূর্ণিমা তিথি এবং রাস উৎসব শেষ হওয়ার দিনে সবচেয়ে বেশি বাজি পোড়ানো হয়।