দেশ বিভাগে ফিরে যান

পাঁচ রাজ্যের নির্বাচন শেষে বুথফেরত সমীক্ষা চিন্তায় রাখল বিজেপিকে

December 1, 2023 | 2 min read

পাঁচ রাজ্যের নির্বাচন শেষে বুথফেরত সমীক্ষা চিন্তায় রাখল বিজেপিকে

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: রাজ্যের নির্বাচন শেষে যে বুথফেরত সমীক্ষা সামনে এল তাতে বিজেপি’র জন্য খুব একটা আশাব্যা‌ঞ্জক নয়। বৃহস্পতিবার তেলেঙ্গানায় ভোটপর্ব মিটতে না মিটতেই সামনে চলে আসে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, মিজোরাম এবং তেলেঙ্গানার বিধানসভা নির্বাচনের এক্সিট পোল। প্রাথমিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, রাজস্থান ছাড়া সব রাজ্যেই সুবিধাজনক জায়গায় রয়েছে কংগ্রেস।

কিছু সংস্থা মধ্যপ্রদেশে শেষ হাসি হাসতে দেখছে শিবরাজ সিং চৌহানকে। যদি শিবরাজ জয়ী হন, সেক্ষেত্রে জিতবে তাঁর শেষ মুহূর্তের মাস্টারস্ট্রাক, অর্থাৎ লাডলি লক্ষ্মী প্রকল্প। মানেটা খুব পরিষ্কার—মোদী নন, মধ্যপ্রদেশে বিজেপির ভাগ্যবদল ঘটাতে পারে একমাত্র শিবরাজের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। আবার যত সহজে রাজস্থানে কংগ্রেসের গদি উল্টে যাবে বলে মনে করা হচ্ছিল, এক্সিট পোলগুলিতে সেই পূর্বাভাস পাওয়া যায়নি। বরং একাধিক সমীক্ষক সংস্থা এগিয়ে রেখেছে কংগ্রেসকে। সোজা কথায়, মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত টানটান উত্তেজনা জিইয়ে থাকছে। রাজস্থানে কংগ্রেসের আশার আলো হতে চলেছে নির্দল প্রার্থীরা। সমীক্ষা বলছে, ১০ থেকে ১৮টি আসন নির্দলরা পাবে। সেক্ষেত্রে কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকে থাকা এই প্রার্থীরা গেহলটের সঙ্গে যাওয়াই পছন্দ করবেন। শঙ্কা বাড়বে বিজেপির। ত্রিশঙ্কু বিধানসভার আভাস শুধু মিলেছে মিজোরামে। মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট এবং জোরাম পিপলস মুভমেন্ট—দু’পক্ষই কমবেশি সমান আসন পেলেও ম্যাজিক নম্বর কেউ পাচ্ছে না।

প্রতিটি রাজ্যে এবার কংগ্রেস ক্ষমতা দখলের জন্য লড়াই করেছে। মধ্যপ্রদেশ বিজেপির থেকে ছিনিয়ে নিতে মরিয়া প্রচার চালিয়েছেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা। একই রকম রাজস্থান ও ছত্তিশগড়ে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য তারা সচেষ্ট। গত তিন মাসে তেলেঙ্গানার ভোটের ছবিও কংগ্রেস আমূল বদলে দিয়েছে। দক্ষিণের এই রাজ্যে তিন মাস আগেও বিআরএসের চ্যালেঞ্জার ছিল বিজেপি। কিন্তু কর্ণাটক জয় ও ভারত জোড়ো যাত্রা ছবিটি বদলে দেয়। ইন্ডিয়া টিভি–সিএনএক্স, জন কি বাত, নিউজ ২৪–টুডেস চাণক্য, রিপাবলিক টিভি–ম্যাট্রিজ, টিভি ৯–পোলস্টার্ট প্রত্যেকে ১১৯ আসনবিশিষ্ট বিধানসভায় কংগ্রেসকে এগিয়ে রেখেছে। অধিকাংশের ধারণা বিজেপি এই রাজ্যে দ্বিতীয় অঙ্কে পৌঁছাতে পারবে না। হায়দরাবাদ অঞ্চলের প্রভাবশালী দল এআইএমআইএম মাত্র ৯টি আসনে লড়ছে। তারা ৫ থেকে ৭টি আসন পেতে পারে। কংগ্রেস তেলেঙ্গানায় জিতলে সেটা হবে বড় চমক।

মধ্যপ্রদেশে (২৩০ আসন) গতবার কংগ্রেস জিতেছিল। কিন্তু দেড় বছরের মাথায় কংগ্রেস ভেঙে সরকার গড়ে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী হন শিবরাজ সিং চৌহান। এবার কংগ্রেসের বদলা নেওয়ার পালা। দৈনিক ভাস্কর, জন কি বাত, টাইমস নাউ–ইটিজি ও টিভি ভারতবর্ষ–পোলস্টার্ট মনে করছে, কংগ্রেস সেই বদলা নিতে পারবে। তারা কংগ্রেসকে ১০২ থেকে ১২৫টি আসন দিচ্ছে। পাশাপাশি ইন্ডিয়া টুডে–অ্যাক্সিস মাই ইন্ডিয়া এবং ইন্ডিয়া টিভি–সিএনএক্স বিজেপিকে বিপুল ভোটে (১৪০–১৬২) জয়ী দেখছে। মধ্যপ্রদেশে বিজেপি ক্ষমতা ধরে রাখতে পারলে সেটা হবে তাদের কৃতিত্ব।

৭ নভেম্বর থেকে শুরু করে ৩০ তারিখ পর্যন্ত এই পাঁচ রাজ্যে ভোট গ্রহণ হয়। বৃহস্পতিবার শেষ দফার ভোট হয় তেলেঙ্গানায়। ভোটের ফল প্রকাশ হবে ৩ ডিসেম্বর।
এই পাঁচ রাজ্যের মধ্যে মধ্যপ্রদেশ ছিল বিজেপির দখলে, কংগ্রেসের দখলে রাজস্থান ও ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা বিআরএসের এবং এমএনএফ ছিল মিজোরামের নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠ দল।

অতীতে বহু ক্ষেত্রেই বুথ ফেরত সমীক্ষার ফলাফল মেলেনি। ৩ ডিসেম্বর পাঁচ রাজ্যের ফল ঘোষণার সঙ্গেই স্পষ্ট হবে। কিন্তু এক্সিট পোলের সিংহভাগের পূর্বাভাস রবিবার মিললে বিজেপির কাছে প্রধান ধাক্কা কী হবে? চার রাজ্যে ভরাডুবি? তা কিন্তু নয়। সেক্ষেত্রে রাজ্য স্তরের রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতি ছাপিয়ে যাবে একটি শঙ্কা—মোদী ম্যাজিকে আর কাজ হচ্ছে না। হিন্দিভাষী তিন রাজ্য এবং দক্ষিণের প্রবেশদ্বার তেলেঙ্গানায় এবার বিজেপির কোনও রাজ্য নেতাকে সেনাপতি করা হয়নি। ছিলেন না মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীও। একমাত্র স্টার ক্যাম্পেনার প্রধানমন্ত্রী। সুতরাং এই চার রাজ্যে ভালো ও খারাপ দু’রকম ফলেরই দায় ও দায়িত্ব নিতে হবে মোদীকে। সেই শঙ্কার রেশ গড়াবে লোকসভা পর্যন্ত।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Congress, #bjp, #Exit Poll, #Vote, #polls

আরো দেখুন