ধেয়ে আসছে ‘সোলার স্টর্ম’! কী কী সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে পৃথিবীতে?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে ভয়াবহ সৌরঝড়। মার্কিন গবেষণা সংস্থা ‘ন্যাশনাল ওসিয়ানিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ জানাচ্ছে, আজ শুক্রবারই আঘাত আনতে পারে সৌরঝড়। নোয়ার আশংকা, সৌরঝড়ের জেরে গোটা বিশ্বের ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে। সৌরঝড় ভূ-চৌম্বকীয় ঝাপটায় পরিণত হলে, তার প্রভাব কয়েকদিন পর্যন্ত দিন স্থায়ী হতে পারে। বিজ্ঞানের পরিভাষায় সৌরঝড়কে ‘করোনাল মাস ইজেকশান (সিএমই)’ বলা হয়।
গবেষক তমিথা এক্স হ্যান্ডলে জানিয়েছেন, শুক্রবার একাধিক জি-২ মাত্রার অর্থাৎ মাঝারি শক্তির সিএমই মিলে গিয়ে শক্তিশালী জি-৩ মাত্রার সৌরঝড়ে পরিণত হয়ে পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে পারে। সূর্যের করোনা থেকে নিঃসৃত প্লাজমা অর্থাৎ আয়নিত কণা, ইলেকট্রন ও চৌম্বকক্ষেত্র সিএমই নামে পরিচিত। সিএমইর পৃথিবীতে পৌঁছতে গতির উপর নির্ভর করে কয়েক দিন থেকে কয়েক ঘন্টা সময় লাগে।
সিএমই ও পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের ম্যাগনেটোস্ফিয়ারের সঙ্গে প্রতিক্রিয়ায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হতে পারে। কৃত্রিম উপগ্রহের সঙ্গে যোগাযোগ বিঘ্নিত হতে পারে। জিপিএস, বেতার এবং ইন্টারনেট যোগাযোগে প্রভাব পড়তে পারে। এমনকি বিদ্যুৎ পরিষেবায় সমস্যা দেখা দিতে পারে। সৌরঝড়ের জেরে মেরুপ্রদেশের আকাশে মেরুজ্যোতি তৈরি হতে পারে।
তবে নোয়ার মতে, বাস্তবে আরও ভয়ঙ্কর হতে চলেছে সৌরঝড়ের প্রভাব। তাঁদের বক্তব্য, এমন ভয়ঙ্কর সৌরঝড় আধুনিক পৃথিবী দেখেছিল ১৮৫৯ ও ১৯২১ সালে। ১৯২১ সালে সৌরঝড়ের দাপটে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। পৃথিবীকে ঘিরে থাকা বিশাল চৌম্বক ক্ষেত্রে বড় ফাটল ধরেছিল। বিষাক্ত সৌরকণা আর মহাজাগতিক রশ্মি পৃথিবীর বুকে প্রবেশ করেছিল।১৮৫৯ সালে সৌরঝড়ের কারণে বিষুবরেখার নীচে দক্ষিণ গোলার্ধের কলাম্বিয়াতেও খুব উজ্জ্বল মেরুজ্যোতি দেখা গিয়েছিল।
তবে ইন্টারনেট পরিষেবার উপর কতটা আঘাত আসবে তা বলা যায় না। সমুদ্রের নীচে বিছিয়ে রাখা ইন্টারনেট কেব্ল সৌরঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। চৌম্বকক্ষেত্রে আঘাত আসলে কেবলগুলি বিগড়ে যায়। ফলে ইন্টারনেট পরিষেবা বিপন্ন হাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকছে।