ফিরে দেখা: সন্তোষ দত্ত
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সত্যজিৎ রায়ের ‘পরশ পাথর’, ‘তিন কন্যা’, ‘সোনার কেল্লা’, ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’, ‘গু-গা-বা-বা’, ‘হীরক রাজার দেশে’- এই সিনেমাগুলো নিয়েই সীমিত নন সন্তোষ দত্ত।
পূর্ণেন্দু পত্রীর ‘মালঞ্চ’, অমল শূরের ‘গোপাল ভাঁড়’, পীযূষ বসুর ‘সিস্টার’, ‘ব্রজবুলি’, তরুণ মজুমদারের ‘গণদেবতা’, দীনেন গুপ্তর ‘মর্জিনা আবদাল্লা’, সলিল দত্তের ‘ওগো বধূ সুন্দরী’, পার্থপ্রতিম চৌধুরীর ‘যদুবংশ’, ‘পূজারিণী’, উমানাথ ভট্টাচার্যের ‘চারমূর্তি’, ‘নবীন মাস্টার’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘ঘটকালি’, ‘শোরগোল’, ‘হুলস্থুলু’, ‘খেলার পুতুল’ বা ‘সুবর্ণলতা’র মতো অসংখ্য সিনেমায় তাঁর অভিনয় দক্ষতার ছাপ রেখে গেছেন সন্তোষ দত্ত !
সন্তোষ দত্তের জন্ম ১৯২৫ সালের ২ ডিসেম্বরে । থাকতেন আমহার্স্ট স্ট্রিটের কাছে। দোতলা পৈতৃক বাড়িটি পরিচিত ছিল ‘সুরধ্বনি কুটির’ নামে।
সন্তোষ দত্ত ছিলেন পেশায় আইনজীবী। প্রথম জীবনে ব্যাঙ্কের চাকরিও করেছেন প্রায় ১৪ বছর ধরে, উড়িষ্যায় বদলির আদেশ এলে চাকরিও ছাড়েন হঠাৎ করে। ওকালতি নিয়ে পড়াশোনা ছিল, তাই হয়তো চলে এলেন আইনজীবীর পেশায়। কলকাতার সিটি সিভিল কোর্টের দ্বিতীয় তলে, আইনজীবীদের বার-এর দেওয়ালে তাঁর ছবি আছে এখনো।
তখনকার ‘রূপকার’ নাট্যগোষ্ঠীর কর্ণধার ছিলেন সবিতাব্রত দত্ত, তাঁরই ‘চলচ্চিত্রচঞ্চরী’তে ‘ভবদুলাল’ রূপে আবির্ভূত হন সন্তোষ দত্ত। আর সেই নাটক দেখেই তাঁকে পছন্দ করেন সত্যজিৎ রায়।
১৯৭৮ সাল পর্যন্ত তিনি কোর্টে যাতায়াত করতেন বাসে-ট্রামে। পরে নেভি ব্লু রঙের একটি আ্যামবাসাডার কেনেন যার নম্বর ছিল WBF 688!
তিনি ছিলেন ফুটবলের ভক্ত। মোহনবাগানের সমর্থক। তাঁর নেশা ছিল ফুটবল আর নাটক দেখা ।
তাই সবিতাব্রত দত্ত, নির্মল কুমারদের নিয়ে ‘আনন্দম’ নাট্যসংস্থা তৈরি করেন তিনি,পরে যার নাম হয় ‘রূপকার’। ‘
সন্তোষ দত্ত রবি ঘোষের ‘শ্রীমতী ভয়ংঙ্করী’ নাটকে অভিনয় করতেন বিজন থিয়েটারে। শেষের দিকে প্রচণ্ড কাশির দমকে জোরে ডায়ালগ বলতে পারতেন না । শেষে ফুসফুসের ক্যানসারে ১৯৮৮ সালের ৫ই মার্চ তাঁর প্রয়াণ হয়।