ব্র্যান্ড ‘সিঙ্গুর ভেজিটেবল’! কৃষিতেই উজ্জীবিত পরিবর্তনের পীঠস্থানের অর্থনীতি
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: একুশ শতকের প্রথম দশকে বাংলার রাজনীতির ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছিল সিঙ্গুর। শিল্প বনাম কৃষি বিতর্ক আবর্তিত হয়েছিল সিঙ্গুরকে ঘিরে। বাংলায় এসেছিল রাজনৈতিক পালাবদল। প্রায় দেড় দশক পর ফের সিঙ্গুর উঠে এল আলোচনায়, তৈরি হল ‘ব্র্যান্ড সিঙ্গুর’। টাটাদের ন্যানো কারখানার জমির অনতিদূরে চলছে কৃষিকাজ, ফসল ফলছে। নেপথ্যে একটি জাপানি ফার্ম। তারা সিঙ্গুরের কৃষিজমি থেকে তাজা সবজি সংগ্রহ করছে। সেগুলি ‘সিঙ্গুর ভেজিটেবল’ ব্র্যান্ড নামে কলকাতায় বিক্রি হচ্ছে। ‘ব্র্যান্ড সিঙ্গুর’ শত শত স্থানীয় কৃষকদের আশা ভরসা হয়ে উঠছে। উজ্জীবিত হচ্ছে অর্থনীতি।
স্থানীয়রা অত্যন্ত খুশি। এটিই সিঙ্গুরের মাটিতে প্রথম বিদেশি বিনিয়োগ। ব্র্যান্ড তৈরি হওয়ায় কৃষকরা আশাবাদী। তাঁরা আশা করছেন আগামী কয়েক বছরে আরও বেশি মাত্রায় বিদেশি বিনিয়োগ আসতে চলেছে সিঙ্গুরে। প্রায় পঞ্চাশটির মতো সবজি চাষ হচ্ছে সেখানে। চল্লিশ কিলোমিটার দূরে কলকাতার বাজারে ছেয়ে যাচ্ছে সেগুলো। সবজির মধ্যে রয়েছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, মটরশুঁটি, পেঁপে, বেগুন, টমেটো, ধনে পাতা, পুদিনা পাতা, ব্রোকলি। স্থানীয় কৃষকরা জানাচ্ছেন, ২০ থেকে ২৫ শতাংশ আয় বেড়েছে তাঁদের। প্রতিদিন প্রায় তিনশো কেজি সবজি কলকাতায় পাঠাচ্ছেন কেউ কেউ। সরাসরি তাঁরা কোম্পানিকে বিক্রি করছেন। কোনও মধ্যসত্ত্বভোগী নেই। ফলে লাভের পরিমাণ বাড়ছে।
দেশের প্রথম সৌরবিদ্যুৎ চালিত হিমঘর তৈরি হয়েছে সিঙ্গুরে। জাপানের আর্থিক সহায়তায় সিঙ্গুরের তাপসী মালিক কিসান মান্ডিতে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল রাজ্যের উদ্যোগে ২০১৯ সালে। এখন সবজি-আনাজ সংরক্ষণের সুযোগ মিলছে কৃষকদের। সিঙ্গুরের মাটি আনাজ চাষের জন্য উপযুক্ত। শীতের আনাজ ফলেও প্রচুর। কিন্তু সংরক্ষণের অভাবে কৃষকরা দাম পেতেন না। এতে তাঁরা দাম পাচ্ছেন। ফড়েরাজ খতম হয়েছে। লাভের মুখ দেখছেন কৃষকরা।