ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষায় হাওড়ার গড়ভবানীপুরের তৈরি হচ্ছে পর্যটনকেন্দ্র
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের গড়ভবানীপুরের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। গড়ভবানীপুরের ঐতিহাসিক নিদর্শন সংরক্ষণ ও পর্যটন কেন্দ্র গড়ার লক্ষ্যে তৈরি হয়েছে রায়বাঘিনী রানি ভবশঙ্করী স্মৃতিরক্ষা সমিতি। ১০ একর জায়গা নিয়ে একটি পর্যটন কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা করেছে হাওড়া জেলা প্রশাসন। প্রায় ৪.৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ইকো পার্ক, শিশু উদ্যান, পদ্মপুকুর, অর্কিড বাগান, নার্সারি ইত্যাদি তৈরি করে পর্যটন কেন্দ্র সাজিয়ে তোলা হবে। ইকো পার্কে ক্যাফেটেরিয়া, রাজ পরিবারের ব্যবহৃত পুকুরের সৌন্দর্যায়ন, মাটির বাড়ি, গাছ বাড়ির আদলে পর্যটক আবাস নির্মাণ, গোপীনাথ জিউ মন্দিরের সংরক্ষণ এবং সৌন্দর্যায়ন হবে। দ্বিতল রাজবাড়ির আদলে মডেল বাড়ি ও মিউজিয়াম তৈরি হবে। মডেল শো-র মাধ্যমে তুলে ধরা হবে স্থানীয় ইতিহাস। দ্বিতীয়তলে প্রদর্শনী কক্ষ গড়া হবে।
পঞ্চদশ থেকে অষ্টাদশ শতকের প্রথম ভাগ অবধি গড়ভবানীপুর ছিল ভুরশিট রাজ্যের রাজধানী। এই রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন চতুরানন মহানিয়োগী। এঁরা মোঘল আমলে রায় উপাধি পেয়েছিলেন। আকবরের আমলে রাজ্যের নাম হয় ভুরশুট পরগনা। রাজা রুদ্রনারায়ণের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী রানি ভবশঙ্করী সিংহাসনে বসেন। কলিঙ্গের পাঠান সুলতান কতলু খাঁর সেনাপতি ওসমান খাঁকে তিনি পরাজিত করেছিলেন। তারপরই আকবর তাঁর সেনাপতি অম্বররাজ মানসিংহকে গড়ভবানীপুরে পাঠিয়ে রানিকে ‘রায়বাঘিনী’ উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন।
পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, মুক্ত সংস্কৃতি চর্চা মঞ্চ, কয়েকটি শয্যা বিশিষ্ট ডরমেটরি-সহ পর্যটক আবাস, সম্মেলন কক্ষ, পার্কিং, ঝিলে মাছ ধরা ও বোটিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে। রাজস্থানের চিতোরগড় দুর্গের প্রবেশদ্বারের ধাঁচে প্রবেশে তোরণ নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০০৫ সালে এই এলাকায় পুরাতত্ত্ব বিভাগের খনন থেকে প্রাচীন মোঘল আমলের নির্দশন পাওয়া যায়। তারপর থেকেই গড়ভবানীপুরকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বর্তমান শাসক দল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ইতিহাস তুলে ধরার উদ্যোগ নেওয়া হয়। রাজ্যের পর্যটন বিভাগের কাছে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বিগত কয়েকবছর ধরে রানি ভবশঙ্করী স্মৃতি মেলার আয়োজনও করা হচ্ছে।