সামনেই নবান্ন-পিঠেপুলির উৎসব, শিউলি পাড়ায় ব্যস্ততা তুঙ্গে
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: দেশের প্রাচীনতম লোকউৎসব গুলোর মধ্য একটি বড় উৎসব নবান্ন। নবান্নের শব্দগত অর্থ ‘নতুন অন্ন’, অর্থাৎ নতুন খাবার। গ্রাম বাংলার উৎসবের বর্ষপঞ্জির শুরুটা হয় এই নবান্ন দিয়েই। আর সমাপ্তি ঘটে চৈত্র সংক্রান্তির চড়কে। নবান্নকে মূলত কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং আগামী বছরের জন্য সুফসল প্রাপ্তির কামনায় নিবেদিত উৎসব হিসেবে অভিহিত করে থাকেন লোক সংস্কৃতি গবেষকরা।
অগ্রহায়ণ মাস পড়তেই মাঠে মাঠে ধান কাটা শুরু হয়েছে। নতুন ধানের আতপ চাল ও খেজুরের গুড় দিয়ে বাংলার ঘরে ঘরে অগ্রহায়ণ মাসজুড়ে পালিত হচ্ছে নবান্ন উৎসব। পাশাপাশি শিউলি পাড়ায় এখন চরম ব্যস্ততা। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে বাড়িতে বাড়িতে চলছে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির পুরুষ, মহিলা থেকে ছেলেমেয়েদের নাওয়া খাওয়ার ফুরসত নেই। দিনরাত এক করে চলছে গুড় তৈরি। ইতিমধ্যেই বাজারে আসতে শুরু করেছে খেজুর গুড়।
ঠান্ডা পড়তেই বিকেলে খেজুর গাছে রসের হাড়ি লাগিয়ে ভোরে গাছ থেকে রসের হাড়ি নামিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন শিউলিরা। হালকা আঁচে ধীরে ধীরে রস ফুটিয়ে গুড় তৈরি হয়। লোহার বড় পাত্রে রস ঢেলে ফোটানো শুরু হয়। প্রায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা ফোটানোর পরে রসের ঘনত্ব বাড়ে এবং রং লালচে হতে শুরু করে। দক্ষ কারিগর কাঠি দিয়ে ফুটন্ত গুড় তুলে গুণমান পরখ করেন। ঘনত্ব, স্বাদ ও গন্ধ ঠিকঠাক হলেই নামিয়ে নেওয়া হয়।
এক কেজি ভালো মানের গুড় তৈরি করতে কমপক্ষে ১০-১২ কেজি রস লাগে। অগ্রহায়ণ মাসজুড়ে বাংলার ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসব চলে। তাছাড়া রয়েছে শীতের পুঠেপুলি তৈরি। ফলে শীতের সময় খেজুর গুড়ের চাহিদা ভালোই থাকে। তাই শীতের মরশুমে বাড়তি কিছু রোজগার হয় গুড় ব্যবসায়ীদের।