সিনেমায় হিংসা! কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে এসে কী বললেন সৌরভ শুক্ল?
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: ‘বরফি’র ‘ইনস্পেক্টর দত্ত’ বৃহস্পতিবার ২৯তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চ মাতিয়ে দিলেন। এক কথায় এদিন ছিল সৌরভ ময়। প্রথমে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন, তারপর মাস্টারক্লাস নিলেন প্রখ্যাত অভিনেতা সৌরভ শুক্ল। শিশির মঞ্চ প্রেক্ষাগৃহে উপচে পড়া ভিড়ে সিনেপ্রেমীরা মুগ্ধ হয়ে শুনলেন তাঁর বক্তব্য।
কখনও নিজের ছোটবেলা, কখনও চলচ্চিত্র বিষয়ক অভিজ্ঞতা আবার কখনও ফিল্ম ছাত্রদের হাতে ধরে শেখালেন সৌরভ। টিপস দেওয়ার পর রসিকতা করে বললেন, ‘পারিশ্রমিক দিয়ে দেবেন প্লিজ’। ‘সত্ত্বা’, ‘জলি এলএলবি’ কিংবা যে কোনও ছবি— একটা চরিত্রের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে কতটা সময় লাগে? উত্তরে দেওয়ার আগে একটু থেমে বললেন, ‘এক লাইনে উত্তর দেওয়া যায় না।’ ৩৫ বছর। সৌরভ বোঝালেন, প্রতিটা চরিত্রের পিছনেই রয়েছে ৩৫ বছরের পরিশ্রম, অভিজ্ঞতা রয়েছে। তারপর কিছুটা পড়াশোনা করতে হয়। কথায় কথায় ফিরে গিয়েছিলেন তাঁর ছেলেবেলায়। মা ছিলেন বাঙালি আর বাবা লখনউয়ের মানুষ। সৌরভের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘আমি আমার মায়ের খাদ্যাভ্যাস নিয়েছি আর বাবার ভাষা।’ ভাত, ডাল, শুক্তো, চচ্চড়ি তাঁর প্রিয়। বাবা-মা দু’জনেই দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাই মা সকালে বেরনোর সময় ডিম, আলু সেদ্ধ আর ভাত করে যেতেন। সেটা গরম করে খেতেন সৌরভ। পরে মুম্বইয়ে আসার পর তিগমাংশু ধুলিয়া আর মনোজ বাজপেয়ীকেও ওই সেদ্ধ ভাত রেঁধে খাইয়েছিলেন তিনি।
রণবীর কপূর অভিনীত ‘অ্যানিম্যাল’ ছবিটি বক্স অফিসে ঝড় তুলেছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ছবিটি দেশে ৩০০ কোটি টাকার বেশি ব্যবসা করেছে। পাশাপাশি ছবি নিয়ে বিস্তর বিতর্ক দানা বেঁধেছে। অনেকেই উল্লেখ করেছেন, ছবিতে মারাত্মক হিংসা দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি ছবির পরিচালক সন্দীপ রেড্ডি বঙ্গার নারীবিদ্বেষী মানসিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ভারতীয় ছবিতে এতটা হিংসা দেখানো কি আদৌ যুক্তিপূর্ণ? কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল বলিউডের অভিনেতা সৌরভ শুক্লর কাছে।
প্রশ্ন শুনে ‘জলি এলএলবি’ খ্যাত অভিনেতা কিন্তু স্পষ্ট ভাষায় তাঁর মনোভাব জানিয়েছেন। উত্তর দেওয়ার আগে সৌরভ জানিয়ে দেন যে তিনি সব ধরনের ছবি দেখেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত রণবীর অভিনীত ছবিটি তাঁর দেখা হয়নি। সৌরভ বললেন, ‘‘এটা নৈতিকতার প্রশ্ন এবং সেটা মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভর করে। যাঁরা নিরামিষাশী, তাঁদের চোখে যাঁরা আমিষ খান, তাঁরা মানুষ হিসাবে গণ্য না-ও হতে পারেন। কিন্তু তার মানে কি তাঁরা মানুষ নন!’’ সৌরভ বিশ্বাস করেন তিনি সমাজের অংশ। পাশাপশি তিনি কোনও নীতি নির্ধারক নন। সৌরভ বলেন, ‘‘দেশের সেন্সর বোর্ড যে ছবিকে ছাড়পত্র দিয়েছে, সেই ছবি প্রদর্শন ঠিক না কি ভুল, তা নিয়ে মন্তব্য করার আমি কেউ নই।’’