এ বার কি ব্যাঘ্রদর্শনের জন্য পাহাড় চড়তে হবে? ফের প্রশ্নটি জাগিয়ে তুলল সিকিম
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: নয়া রেকর্ড! বরফে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা। আর তার মাঝেই জ্বলজ্বল করছে একজোড়া চোখ। হিমালয়ের প্রায় ১২ হাজার ফুট উচ্চতায় দেখা মিলল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের। সিকিমের পাহাড়ে ৩ হাজার ৬৪০ মিটার উঁচুতে লেন্সবন্দি হয়েছে বাঘটি। হিমালয়ের এত উচ্চতায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ঝলক এই প্রথম। যা দেশে এক নয়া রেকর্ড তৈরি করল।
পূর্ব সিকিমের প্যাঙ্গোলাখা অভয়ারণ্যে ক্যামেরা ট্র্যাপ অভিযানের সময় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের গতিবিধি ধরা পড়েছে। বম্বে ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটি (বিএনএইচএস)-র বিজ্ঞানী, গবেষক ও ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্টদের ক্যামেরায় বন্দি হয়েছে বাঘের উপস্থিতি। এতদিন ভারতে বাঘের উপস্থিতির ক্ষেত্রে ৩ হাজার ৬৩০ মিটার (১১ হাজার ৯০৯ ফুট) উচ্চতাই ছিল সর্বাধিক। ২০১৮ সালে অরুণাচলের দিবাং উপত্যকায় বাঘ দেখা গিয়েছিল। তবে, সবচেয়ে বেশি উচ্চতায় বাঘ দেখার ক্ষেত্রে বিশ্বরেকর্ড দখলে রয়েছে ভারতের প্রতিবেশী ভুটানের— ৪ হাজার ৪০০ মিটার (১৪ হাজার ৪৩৫ ফুট)।
অবশ্য এবারই প্রথম নয়। এর আগেও প্যাঙ্গোলাখা অভয়ারণ্যে বাঘের উপস্থিতি ধরা পড়েছিল। তবে, তুলনামূলকভাবে কম উচ্চতায়। রেকর্ড বলছে, ২০১৯ সালের ৬ ডিসেম্বর সন্ধে ৬টা ২৩ মিনিট এবং সাতটার সময় ৯ হাজার ৫৮৩ ফুট উচ্চতায় বাঘের দেখা মিলেছিল। সিকিম-বাংলা-ভুটানের ত্রি-সঙ্গমস্থলে প্যাঙ্গোলাখা অভয়ারণ্যে অবস্থিত। এখানে নানান ধরনের প্রাণীর বাস। তাই এই অভয়ারণ্যে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের উপস্থিতি ধরা পড়া অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন প্রাণী বিশারদরা।
এরপরই ফের বেশ কয়েক বছর ধরে যে প্রশ্নটি বন্যপাণ বিশেষজ্ঞদের মুখে শোনা যাচ্ছে, তা আবার উঠে এল- এ বার কি তা হলে ব্যাঘ্রদর্শনে পাহাড় চড়তে হবে? কেন এই প্রশ্ন? বন দফতর সূত্রেই বলা হচ্ছে, সম্প্রতি বাঘ যে সব জায়গা দেখা গিয়েছে, তার কোনওটিরই উচ্চতা ছ’হাজার ফুটের কম নয়। কখনও আলগাড়ার কাছে, কখনও নেওড়া ভ্যালির ট্র্যাপ ক্যামেরায়, কখনও আবার সিকিমের পাঙ্গোলাখা অভয়রাণ্যে। তিন জায়গার মধ্যে শেষেরটির উচ্চতাই সব থেকে বেশি, ৯৫৮৩ ফুট। সম্প্রতি অরুণাচল প্রদেশেও ১০ হাজার ফুটের থেকে বেশি উচ্চতায় বাঘের দেখা মিলেছে। বাঘের এই পাহাড় চড়ার ঘটনাই এখন পরিবেশবিদদের গবেষণার বিষয়, গবেষকদের পরিভাষায় যাকে বলা হয় ‘হাই অলটিটিউড টাইগার প্রজেক্ট’ বা ‘উচ্চ এলাকায় বাঘ প্রকল্প’।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বহু দিন ধরেই পাহাড় বাঘের চারণভূমি। জিম করবেটও পাহাড়ি এলাকায় মানুষখেকোর পিছনে ঘুরেছেন। এখন তাই নেওড়া, পাঙ্গোলাখা বা অরুণাচলে বাঘের খোঁজ পাওয়াটা আশ্চর্যের নয়।