নজরদারির অভাবে সিকিমের মতো ঘটনা ঘটছে, মোদী সরকারের সমালোচনায় সংসদীয় কমিটি
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মাস দু’য়েক আগে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিপর্যস্ত সিকিম। লোনক হ্রদ ফাটার কারণে ভেঙে গিয়েছে সিকিমের চুংথাম বাঁধ। তাতেই অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গিয়েছে তিস্তার জলস্তর। নদীর তাণ্ডবে আশপাশের এলাকা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, নিখোঁজ হয়েছেন। গত এক দশকে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা এবং গবেষকরা সিকিমে হিমবাহ সৃষ্ট হ্রদ ফেটে বন্যা হওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করেন। কিন্তু কেন্দ্রের তরফে বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
অনেকেই অভিযোগ করেছিলেন, গবেষণায় আগেই জানা গিয়েছিল, সিকিমের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের দক্ষিণ লোনক হ্রদ ১৪টি বিপজ্জনক হ্রদের মধ্যে একটি। যেখানে জিএলওএফ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।২০১২-১৩ সালে ন্যাশনাল রিমোট সেন্সিং সেন্টার এবং ইসরোর এক মীক্ষায় লোনক হ্রদের ঝুঁকি তুলে ধরা হয়েছিল। কেন্দ্রের এই বিষয়ে আগে থেকে সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।
এবার হিমবাহের উপর নজরদারি চালানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে মোদী সরকারের কড়া সমালোচনা করল জলসম্পদ সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। সোমবার সংসদে রিপোর্ট পেশ করেছে ওই কমিটি। যদিও রিপোর্টে নির্দিষ্ট করে সিকিমের বন্যা নিয়ে কোনও উল্লেখ করা হয়নি। পুরোটাই পেশ হয়েছে সামগ্রিকভাবে। কিন্তু রিপোর্টে কমিটি সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ১৯৫০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত হিমবাহের আনুমানিক গলন নিয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট সমীক্ষাই করেনি জিএসআই। এমনকী ২১০০ সাল পর্যন্ত কত বরফ গলতে পারে, তারও আনুমানিক তথ্য দিতে পারেনি তারা। একইভাবে হিমালয় এলাকায় হিমবাহের বরফ গলে যাওয়ার ফলে আয়তন কতটা কমছে এবং জলস্তর কতটা বাড়ছে তারও কোনও তথ্য নেই।
এদিন পেশ করা রিপোর্টে সংসদীয় কমিটি জানিয়েছে, হিমালয় অঞ্চলে বন্যা নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত কোনও নির্দেশিকাও স্থানীয় প্রশাসনগুলিকে দেয়নি সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশন। এই প্রেক্ষিতেই জলসম্পদ সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সুপারিশ করেছে, অবিলম্বে হিমবাহ নিয়ে সমীক্ষার জন্য আলাদা বন্দোবস্ত করা হোক। এক্ষেত্রে ডেডিকেটেড মাউন্টেন হ্যাজার্ড অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট তৈরির কথা বলা হয়েছে রিপোর্টে। পাশাপাশি এহেন সমীক্ষার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দের সুপারিশও করা হয়েছে।