মোদী সরকারের নয়া সিলেবাসে গণতন্ত্রের পাঠ নেই! উদ্বেগ প্রকাশ নির্বাচন কমিশনের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মোদী সরকার গণতন্ত্র মানে না। বরাবর এই অভিযোগ করে আসছে বিরোধীরা। কিন্তু এবার আর অভিযোগ নয়, সরাসরি বাদ গেল গণতন্ত্র। দশম শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কেন্দ্রীয় স্কুল সিলেবাস থেকে গণতন্ত্র সংক্রান্ত আস্ত অধ্যায় ছেঁটে ফেলল কেন্দ্র। ‘ডেমোক্রেটিক পলিটিক্স-২’ বই থেকে সম্পূর্ণ বাদ দেওয়া হয়েছে মোট তিনটি অধ্যায়, ‘গণতন্ত্র ও বৈচিত্র্য’, ‘জনপ্রিয় আন্দোলন’ এবং ‘গণতন্ত্রের সঙ্কট’।
এমনটা অবশ্য নতুন নয়। মুঘল সাম্রাজ্য, গান্ধী হত্যাকারী নাথুরাম গডসের হিন্দুত্ববাদী পরিচয়, আরএসএসকে নিষিদ্ধ ঘোষণা, দেশভাগ, ঠান্ডা যুদ্ধ, প্রজনন, ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব—দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পাঠক্রম থেকে বাদ পড়েছে আগেই। তা নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এবার মোদী সরকারের সিলেবাস নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করে কেন্দ্রকেই চিঠি পাঠল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। চিঠিতে সমালোচনার সুরে কমিশন জানিয়েছে, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য দেশজুড়ে চালু হওয়া নয়া সিলেবাস গণতন্ত্রের পাঠে শুধু দুর্বলই নয়, রয়েছে একাধিক তথ্যগত ভুল। এই পাঠ্যসূচি একজন দায়িত্বশীল নাগরিক গড়ার প্রশ্নে ব্যর্থ, দিশাহীন। সেই কারণে সিলেবাসের ছত্রে ছত্রে সংশোধনীর প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে চিঠিতে। কারণ, কমিশনের মতে, দেশের প্রত্যেক নাগরিকের মননে সঠিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ গড়ে তোলা জরুরি। তবেই তিনি ভোটদানের ক্ষেত্রে নৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হবেন। চিঠিতে মোদী সরকারকে সেকথাও মনে করিয়ে দিয়েছে কমিশন।
সূত্রের খবর, চিঠিতে কমিশনের অভিযোগ, ষষ্ঠ শ্রেণিতে ‘কি এলিমেন্ট অব ডেমোক্রেটিক গভর্নমেন্ট’ নামক চ্যাপ্টার থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় অংশ। সেখানে সাম্য, ন্যায়ের ধারণা ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে দলিত আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদের সংগ্রামের কথা উল্লেখ ছিল। তার অর্ন্তভুক্তি জরুরি বলেই মনে করে কমিশন। দশম শ্রেণির সোশ্যাল সায়েন্সের পাঠ্যসূচিতে ‘পলিটিক্যাল পার্টি’ নামক অধ্যায়টিরও তারা সরাসরি মূল্যায়ন করতে চেয়েছে। আবার ‘পপুলার স্ট্রাগল অ্যান্ড মুভমেন্ট’-এর মতো চ্যাপ্টার বাদ পড়ায় নির্বাচনী সাক্ষরতার ক্ষেত্রে শূন্যতা তৈরি হবে বলে আশঙ্কা কমিশনের। এমনকী, নবম শ্রেণির ‘হোয়াট ইজ ডেমোক্রেসি? হোয়াই ডেমোক্রেসি?’ নামক অধ্যায়টি অরাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দিয়ে যাচাই করিয়ে নেওয়া প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে।