আন্তর্জাতিক বিভাগে ফিরে যান

দাউদ জমানার অবসান! করাচির হাসপাতালে বিষক্রিয়ায় মৃত্যু, জোর জল্পনা

December 18, 2023 | 2 min read

করাচির হাসপাতালে বিষক্রিয়ায় মৃত্যু, জোর জল্পনা

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ফের সংবাদের শিরোনামে দাউদ ইব্রাহিম। তার মৃত্যুর খবর ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন সূত্রে খবর মিলছে, করাচি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে মুম্বই ধারাবাহিক বিস্ফোরণের মূলচক্রী দাউদ। শরীরে বিষক্রিয়ার কারণে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল করাচির হাসপাতালে। রবিবার রাতে এই খবর ছড়ায় যে দাউদকে কেউ বা কারা বিষ খাইয়ে দিয়েছে। তাকে ভর্তি করা হয়েছে করাচির হাসপাতালে। দুদিন ধরে করাচির ওই হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা কষছে ওই মাফিয়া।

দীর্ঘ দিন ধরেই করাচিতে থাকেন দাউদ। কিছু দিন আগে জানা গিয়েছিল, পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা ইন্টার সার্ভিস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই)-এর শীর্ষস্থানীয় একটি সাম্মানিক পদে দাউদকে বসানো হয়েছে। ফ্রি প্রেস জার্নালের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, পাক আইএসআইয়ের সহকারী ডিরেক্টর জেনারেল (এডিজি) হিসাবে দাউদকে আনা হয়েছে। পাকিস্তানের গুপ্তচর ব্যবস্থায় দাউদের অবদানের জন্য এই পদ তাঁকে দেওয়া হয়েছে।

আসলে দাউদের ঠিকানা ও তার গতিবিধি নিয়ে গত প্রায় তিরিশ বছরে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের গল্প তৈরি হয়েছে। বার বার তার মৃত্যুর খবর রটেছে। কখনও রটেছে যে দাউদ এইডসে আক্রান্ত, কখনও কলেরায়, কখনও টাইফয়েডে, কখনও বা কোভিডে। কোনটা মানুষ বিশ্বাস করবে সেটাই সবচেয়ে কঠিন ব্যাপার।

ঘটনা হল, গত ত্রিশ বছরে ভারত তাকে দেশে নিয়ে আসতে ব্যর্থ হয়েছে। ভারত প্রত্যার্পণ করাতে পারেনি। এর মধ্যে ১৩ বছর কংগ্রেস কেন্দ্রে ক্ষমতায় ছিল। ১৫ বছর কেন্দ্রে বিজেপির নেতৃত্বে সরকার চলেছে। আর মাঝে দু’বছর অবিজেপি-অকংগ্রেসি সরকার চলেছে।

এদিকে দাউদের অসুস্থতার খবর ছড়িয়ে পড়তেই গোটা পাকিস্তান জুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবায় কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। লাহোর, ইসলামাবাদ, করাচির মতো দেশের প্রধান শহরগুলোতেও ধীর গতিতে চলছে ইন্টারনেট। রাত আটটার পরে ইন্টারনেট পরিষেবা কার্যত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের মতো সোশাল মিডিয়াও কাজ করছে না।

যদিও দাউদের পরিবারের তরফে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের কাছে বিষক্রিয়ার জল্পনা ভিত্তিহীন বলে দাবি করা হয়েছে।

মুম্বই পুলিশের এক কনস্টেবল ছিলেন ইব্রাহিম কাস্কর। ডোঙ্গরি-নাগপাডা এলাকায় কর্তব্যরত মি. কাস্করকে সকলেই শ্রদ্ধা করত। ইব্রাহিম আর আমিনা কাস্করের ১২ টি সন্তানের অন্যতম দাউদ।
সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময়েই স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দেন দাউদ। ছোটখাটো চুরি ছিনতাই করত প্রথমে। তারপরে শুরু হয় পকেটমারি, পাড়ার বন্ধুবান্ধবকে সঙ্গে নিয়ে মারপিট এসব।
ভারতের অপরাধ জগতের সবথেকে বড় ‘ডন’ দাউদ ইব্রাহিমের শুরুটা হয়েছিল এইভাবেই।
বছর কুড়ি বয়সে ওই ছেলে ছোকরাদের সঙ্গে নিয়েই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বসেন সেই সময়ের প্রতাপশালী পাঠান গ্যাংকে। নিজের দলে অন্যান্য ছেলেদের সঙ্গেই ছিল দাউদের ভাই শাব্বিরও। পরে সংবাদমাধ্যম যে গোষ্ঠীকে ‘ডি কোম্পানি’ নামে অভিহিত করতে থাকে। মনে করা হয় এখন দাউদের আরেক ভাই আনিস ইব্রাহিম এখন ওই ‘ডি কোম্পানি’র সব কাজকর্ম দেখাশোনা করে।

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, করাচির অভিজাত পাড়ায় সপরিবারে থাকে দাউদ। সেখানে পাক প্রতিরক্ষা বাহিনী তাকে সুরক্ষা দিয়ে রেখেছে। এও জানা যায় যে পাকিস্তানে দ্বিতীয় বিয়ে করেছে এই মাফিয়া ডন। তার স্ত্রীর নাম মেহজবিন। তার তিন মেয়ে। এক মেয়ে মাহরুখের বিয়ে হয়েছে প্রাক্তন পাক ক্রিকেটার জাভেদ মিঁয়াদাদের ছেলের সঙ্গে। তবে সবই খবর। সত্যি তো হলো, গত কয়েকদশক ধরে দাউদ নিয়ে একটা রহস্যের জাল তৈরি হয়েছে। যা ভেদ করা সম্ভব হয়নি। তবে নানা সময় নানা ধরনের খবর তাকে নিয়ে তৈরি হয়েছে। এবারও সেরকমি কিছু হল কীনা তা সময়ই বলবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#rumour, #Poison, #Dawood Ibrahim, #Truth, #Death news, #Death

আরো দেখুন