এক রাতেই কোটিপতি! বঙ্গে নজিরবিহীন জুয়াড়ি মেলা, কোথায় জানেন?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আজব কান্ড! এই মেলায় প্রকাশ্যে জুয়া খেলতে পারবেন আপনিও। এমনকি জুয়া খেলার নিরাপত্তায় হাজির থাকেন পুলিশ কর্মীরাও। প্রতিবছর মূলা ষষ্ঠী উপলক্ষে পুরাতন মালদহের মোকাতিপুর বেহুলা নদীর তীরে বসে এই জুয়াড়ি মেলা। জনশ্রুতি, একসময় লখিন্দরের দেহ নিয়ে এই নদী দিয়েই ভেসে গিয়েছিল বেহুলার ভেলা। সম্ভবত সেকারণেই মনসামঙ্গল কাব্যেও এই মেলার উল্লেখ পাওয়া যায়।
কীভাবে সূচনা হয়েছিল এই মেলার? শোনা যায়, তুর্কি শাসনকালে পুরাতন মালদা ছিল ঘন জনবসতিপূর্ণ। অথচ মালদা শহরে সেভাবে জনবসতি গড়ে ওঠেনি। সেইসময় মোকাতিপুর এলাকায় ঘন জঙ্গল। জন্তু জানোয়ারের আবাসস্থল। বাঘের ভয়ে ওই এলাকায় দিনদুপুরে কেউ যাওয়ার সাহস পেত না। সেই জঙ্গলেই ছিল ষষ্ঠীদেবীর থান। ঘরের মেয়ে-বউরা সেই বেদিতে যখন মুলাষষ্ঠী তিথিতে পুজো দিতে যেতেন, তখন পুরুষরা দল বেঁধে তাঁদের পাহারা দিতেন। সকাল থেকে সন্ধেবেলা পর্যন্ত চলত পুজো। পুরুষরা অতক্ষণ একভাবে বসে থাকতে না পেরে সময় কাটাতে শুরু করেন জুয়া খেলা। সেই থেকে চলছে এই জুয়া মেলা। আগে শুধু পুরুষরা এই মেলায় অংশ নিলেও সময়ের সাথে মহিলারাও জুয়া খেলায় সক্রিয়ভাবে অংশ নেন৷
বিশাল আম বাগানে জুয়া মেলায় দেখা যায় বিচিত্র সব জুয়ার ঠেক, কোথাও তাস, কোথাও গুঠি দিয়ে খেলা হচ্ছে। যার যেখানে পছন্দ নিজের ইচ্ছেমতো খেলতে পারেন জুয়া। এছাড়াও ফুচকা-জিলিপি-পাঁপড়ভাজার দোকানের পাশেই দেখা যায় পাশা, তাস, চক্রর মতো একাধিক জুয়া খেলার বোর্ডের সহবস্থান। সকাল থেকে শুরু হওয়া মেলা আগে রাত্রি পর্যন্ত চললেও এখন সন্ধ্যা অবধি চলে জুয়া খেলা। এই মেলায় কোনও ধনী-গরিব বিভেদ নেই নেই কোনও পুলিশি নিষেধাজ্ঞাও।এক রাতেই ২ কোটি টাকার জুয়া খেলা হয় এই মেলায় তাই শুধু মালদা বা অন্যান্য জেলা থেকে নয়, বিহার, ঝাড়খণ্ড, এমনকি অসম থেকেও প্রচুর মানুষ হাজির হন এই মেলায়।