শিশু শ্রমিক নির্মূলকরণে মোদী সরকারের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে, সংসদীয় কমিটির রিপোর্টে সেরকমই ইঙ্গিত
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ৭ থেকে ১৪ বছরের বালক-বালিকারা সাধারণত শিশু শ্রমিকের মধ্যে পড়ে৷ সমাজ বিজ্ঞানীদের মতে, দারিদ্র্য ও সামাজিক সুরক্ষার অভাবই শিশু শ্রমের অন্যতম কারণ৷ উন্নত দেশগুলিতে যে সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থা আছে, ভারতের মতো দেশগুলিতে তার বিন্দু বিসর্গ নেই৷ এবিষয়ে নানা সময়ে আলোচনা হয়েছে। মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে এবং দেশকে এই ‘অভিশাপ’ থেকে মুক্ত করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু মোদী সরকারের প্রায় দশ বছরের সময়কালে এই বিষয়ে খুব একটা পরিবর্তন দেখা গেল না। বরং শিশু শ্রমিক নির্মূলকরণে মোদী সরকারের সদিচ্ছা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
বুধবার সংসদে শিশু শ্রমিক নিয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করেছে শ্রম সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত সাত বছরে এ সংক্রান্ত সরকারি কর্মসূচিতে বরাদ্দের পরিমাণ কমিয়েছে কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে বরাদ্দ বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে শ্রম সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
শিশু শ্রমিকদের পুনর্বাসন দিয়ে সমাজের মূল স্রোতে ফেরানোর লক্ষ্যে ১৯৮৮ সাল থেকে একটি কর্মসূচি চালু করে কেন্দ্র। পোশাকি নাম—ন্যাশনাল চাইল্ড লেবার প্রজেক্ট। এর মাধ্যমে ৯-১৪ বছর বয়সি শিশুদের কাজ থেকে ছাড়িয়ে এনে প্রথমে স্পেশ্যাল ট্রেনিং সেন্টারে পাঠানো হয়। সেখানেই প্রাথমিক শিক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন ভোকেশনাল ট্রেনিংয়ের বন্দোবস্ত থাকে। প্রশিক্ষণ শেষে তাদের প্রথাগত শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। উদ্ধার হওয়া শিশু শ্রমিকের বয়স ৫-৮ বছরের মধ্যে হলে সমগ্র শিক্ষা অভিযানের মাধ্যমে তাদের সরাসরি এই শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। এই এনসিএলপি কর্মসূচিতেই বিগত সাত বছরে কেন্দ্রীয় বরাদ্দের পরিমাণ ক্রমশ কমানো হয়েছে বলে শ্রম সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
দেখা যাচ্ছে, ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে এনসিএলপি খাতে বাজেট বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৯৫ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা। ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে বরাদ্দের পরিমাণ কমে হয়েছে ১০ কোটি টাকা। সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এই রিপোর্টকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে তথ্যাভিজ্ঞ মহল। রিপোর্টে সংসদীয় কমিটি জানিয়েছে, ২০১৭-১৮ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষ পর্যন্ত এই খাতে মোট ৩৫২ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। খরচের পরিমাণ ৩৩৭ কোটির কিছু বেশি। রিপোর্ট থেকে স্পষ্ট, বরাদ্দ অর্থের পুরো অংশ খরচ করা যায়নি।