তিন বছর পর ফের পূর্বপল্লিতে পৌষমেলা এবং বাউল মঞ্চ, আনন্দে আত্মহারা শিল্পীরা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সেই পৌষ আর নেই, এখন তো মাইক্রোওয়েভ বিক্রি হয়! এই অভিযোগটা শুনছি বহুদিন ধরে। ভয়ানক ভিড়, দাঁড়ানোর জায়গা পাওয়া যায় না। হোটেলগুলো গলা কাটে। এত আক্ষেপের পরেও শান্তিনিকেতনের পৌষমেলায় ভিড় উপচে পড়ে প্রতিবছর। কিন্তু ২০১৯ থেকে ২০২৩, তিন বছর বন্ধ ছিল বাঙালির প্রাণের এই মেলা। অবশেষে ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা ফিরছে পুরনো জায়গা পূর্বপল্লির মাঠে। মেলার প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। খুশির হাওয়া বাউল, ফকিরদের মধ্যে। ঐতিহ্যবাহী বাউল মঞ্চে ফের গান গাওয়ার সুযোগ পাবেন—এটা ভেবেই তাঁরা আনন্দে আত্মহারা।
বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলায় বরাবরই বীরভূমের লোকসংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে মেলার দিনগুলোতে অনুষ্ঠান করত কর্তৃপক্ষ। মেলায় প্রতিদিনই নিয়ম করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করত বিশ্বভারতীর মেলা কমিটি। শেষ ২০১৯ সালেও তার কোনও ব্যতিক্রম হয়নি। এরপর ২০২০ সালে করোনার কারণে ও পরের দু’বছর বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর অনিচ্ছায় পৌষমেলা করা সম্ভব হয়নি পূর্বপল্লির মাঠে। ফলে, গত তিন বছর জেলা পরিষদের ডাকবাংলো ময়দানে বিকল্প মেলার আয়োজন করেছিল জেলা প্রশাসন। সেখানেও বীরভূমের লোকসংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে সাংস্কৃতিক মঞ্চে প্রতিদিনই অনুষ্ঠান করা হয়েছে। কিন্তু পরিসর অল্প হওয়ায় মন খারাপ থাকত শিল্পীদের। এবছর মেলা তার মূল জায়গায় হচ্ছে বলে উচ্ছ্বসিত বাউল ও ফকিরের দল।
বৃহস্পতিবার বাউল সম্রাট পূর্ণদাস বাউল বলছিলেন, ‘বীরভূম ছাড়াও বাঁকুড়া, বর্ধমান, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদে অনেক বাউল ও ফকির রয়েছেন। তাঁরা গান গাওয়ার উপযুক্ত মঞ্চ খোঁজেন। পৌষমেলার বাউল মঞ্চ তাদের সব থেকে প্রিয় জায়গা। কারণ, সেখানে লক্ষাধিক মানুষের সামনে গান গাওয়ার সুযোগ হয়। সেজন্য পূর্বপল্লির মাঠে এবার মেলা হওয়ায় সেখানে প্রচুর আউল-বাউল, ফকিরের সমাগম হবে। তবে বিশ্বভারতীর রুচিবোধের বিষয়টিও সব শিল্পীকে খেয়াল রাখতে হবে।’