ভারত সরকারের ঋণ জিডিপির ১০০ শতাংশ স্পর্শ করতে চলেছে, বলছে রিপোর্ট
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: অমৃতকালেই আকণ্ঠ ঋণে ডুবে যেতে পারে ভারত। এমন সম্ভাবনা এখন প্রবল। বিশ্বের দ্রুত বাড়তে থাকা দেশগুলির মধ্যে অগ্রগণ্য ভারত। কিন্তু, এই দৌড়ের সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে ছায়ার মতো পিছু নিয়ে রয়েছে ঋণের বোঝা। সরকারি পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট যে, মোদী সরকারের বাক্যবাগীশ মন্ত্রীরা বাজারমাত করতে যাই বলুন না কেন, ধীরে ধীরে দেশের ঘাড়ে ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। একটি রিপোর্টে জানা গিয়েছে, দেশের মোট ঋণের পরিমাণ ২.৪৭ লক্ষ কোটি ডলার অর্থাৎ ২০৫ লক্ষ কোটি টাকা। চলতি আর্থিক বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ত্রৈমাসিকের হিসেব এটা।
এর আগে গত আর্থিক বছরের জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে ঋণের পরিমাণ ছিল ২.৩৪ লক্ষ কোটি ডলার। অর্থাৎ ২০০ লক্ষ কোটি টাকা। একটি বেসরকারি সংস্থা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার তথ্য তুলে ধরে কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলির আর্থিক ঋণের পরিমাণ দেখিয়েছে। খোদ আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার (আইএমএফ) নিজেদের বার্ষিক রিপোর্টেও এই মর্মে সতর্কবার্তা দিয়েছে কেন্দ্রকে। তাদের পূর্বাভাস— ভারত সরকারের ঋণ জিডিপির ১০০ শতাংশ স্পর্শ করতে চলেছে। কারণ, কেন্দ্রকে আগামী দিনে যে পরিমাণ অর্থলগ্নি করতে হবে, সেই তুলনায় আয়ের সংস্থান কম। আর এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর থেকে যথেষ্ট অস্বস্তিতে মোদী সরকার।
কেন্দ্রের ঋণ গ্রহণের কারণ একাধিক—বাজেট ঘাটতি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, লগ্নির স্বল্পতা, ক্রমহ্রাসমান আয়ের সংস্থান ইত্যাদি। আয় ও ব্যয়ের ঘাটতি মেটাতে সাধারণত দেশীয় প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি কিংবা বিদেশি সংস্থা তথা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেয় সরকার। সরকারি বন্ড বিক্রিও অন্যতম পন্থা। অন্যদিকে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জল, বিদ্যুৎ, পরিবহণ, যোগাযোগ ও সড়ক ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে গতি পায় আর্থিক বৃদ্ধি। এই লক্ষ্য নিয়েই বিগত বছরগুলিতে এই সব খাতে বহু গালভরা প্রকল্প ঘোষণা করেছে মোদী সরকার। কিন্তু সেই প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নের অর্থ কোথা থেকে আসবে, তার রূপরেখা সেভাবে স্থির হয়নি। বহু প্রকল্পের সঙ্গেই বলা হয়েছিল, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে বেসরকারি লগ্নি আসবে। কিন্তু পর্যাপ্ত লগ্নি নেই। অন্যতম প্রধান সঙ্কট এনেছে একটানা দু’বছর ধরে চলা মূল্যবৃদ্ধি। মোদী সরকার অবশ্য মূল্যবৃদ্ধির বিরূপ প্রভাব স্বীকার করতে নারাজ। কিন্তু আইএমএফের সতর্কবার্তা থেকেই স্পষ্ট যে, আন্তর্জাতিক মহল এবার ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির সম্ভাবনার আড়ালে বিপদ সঙ্কেতও দেখছে।