বড়দিনে দেদার বিকোচ্ছে নবদ্বীপের ছানার কেক
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বড়দিনে হিট ছানার কেক। নদীয়ার নবদ্বীপের বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে দেদার বিকোচ্ছে ছানার তৈরি কেক। ছোট ছোট বেকারিগুলোতেও তৈরি হচ্ছে এই কেক। অন্য কেকে ডিম থাকায় তা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নিবেদন করা যায় না। এখানেই হিট ছানার তৈরি কেক। বিভিন্ন মঠ-মন্দিরে দেবদেবীর ভোগে নিবেদন করা হয় ছানার কেক। ক্রেতারা দেদার কিনছেন এই কেক।
সোমবার বড়দিন। নবদ্বীপের অধিকাংশ দোকানে কেক বিক্রি হচ্ছে। হরেকরকম কেক সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। পাড়ার পাড়ায় স্টল করে বিক্রি হচ্ছে ছোট বড় বিভিন্ন সাইজের কেক। এছাড়া মিষ্টির দোকানে তৈরি হচ্ছে ছানার বা ক্ষীরের কেক। এইসব নিরামিষ কেক মূলত মঠ-মন্দিরের দেবতাকে ভোগ নিবেদন করা হয়। বড়দিনে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুকেও ছানা ও ক্ষীরের কেক নিবেদন করা হবে। সেই প্রসাদ ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
মহাপ্রভু মন্দিরের অন্যতম সেবাইত তথা নবদ্বীপ গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজের কার্যকরী সভাপতি সুদিন গোস্বামী বলেন, যিশুখ্রিস্ট একজন অবতার ছিলেন। সেজন্য তাঁর জন্মদিনে মহাপ্রভুকেও আমরা ছানা ও ক্ষীরের তৈরি কেক নিবেদন করি। আমাদের বংশের মায়েরাই এই কেক তৈরি করেন। মহাপ্রভু সর্বধর্মকে মর্যাদা দিতে শিখিয়েছিলেন। তাঁর আদর্শ মেনেই আমরা এই সমস্ত অনুষ্ঠান পালন করে থাকি।
পোড়ামাতলার মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী শ্রীকান্ত দাস বলেন, সারা বছরই এখানকার মঠ-মন্দিরে ছানার কেকের চাহিদা থাকে। তবে শীতকালে বেশি চাহিদা থাকে। বড়দিন উপলক্ষে এই কেক বেশি বিক্রি হয়। এই কেক সম্পূর্ণ ছানা দিয়ে তৈরি করা হয়। ছানার সঙ্গে কাজু, কিসমিস, চেরি, এলাচ প্রভৃতি দেওয়া হয়। ১০টাকা পিস ও ৫০০টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়।পোড়ামাতলায় কেকের দোকানদার মিলনকুমার ঘোষ বলেন, পরপর দু’বার লকডাউনের ফলে মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়। সেকারণে কেকের চাহিদা কিছুটা কম। তবে নিরামিষ কেক বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় দামও কিছুটা বেড়েছে। দেড়শো টাকা থেকে বিভিন্ন মান ও সাইজের কেক বিক্রি হচ্ছে।
বউবাজার বড়পাঠক বাড়ি চিন্তামণি কুঞ্জের সেবাইত কৃষ্ণেন্দু গোস্বামী বলেন, বিশ্বায়নের যুগে এক সংস্কৃতি অপর সংস্কৃতির সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়েছে। তাই ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন খ্রিস্ট সম্প্রদায়ের হলেও এই দিনটি বৈষ্ণবীয় সংস্কৃতির মেলবন্ধন হয়ে উঠেছে। ফলে ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন উপলক্ষে নবদ্বীপের বিভিন্ন মঠ-মন্দিরে ছানার কেক ভোগ দেওয়া হয়।