বড়দিনের কলকাতায় শীতের আমেজে কোন কোন জায়গাগুলোয় ঘুরতে পারেন?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: এসে পড়েছে শীতকাল। বাড়ছে শীতের কামড়। বড়দিনের মিঠে রোদে বেরিয়ে পড়ুন কলকাতা ঘুরতে। কমলালেবু, কানঢাকা টুপি সঙ্গে নিয়ে বড়দিন কাটান কলকাতার অলিগলিতে। ভ্রমণ প্রিয় বাঙালির অভ্যাসে পরিণত হয়েছে কলকাতা ঘোরা।
বড়দিনে কলকাতার কোথায় কোথায় ঘুরতে যেতে পারেন?
চিড়িয়াখানা
যাত্রা শুরু করুন চিড়িয়াখানা থেকে। সকলে একসঙ্গে দেখা করে নিন পিটিএসএ বা ন্যাশনাল লাইব্রেরির সামনে। সেখান থেকে খুব সামনেই চিড়িয়াখানা। সকাল ৯টা নাগাদ খুলে যায় চিড়িয়াখানা। তবে যাওয়ার আগে অবশ্যই আলিপুর চিড়িয়াখানার অফিশিয়াল ওয়েবসাইট দেখে নেবেন। সেখানে টাইম আর কত টাকা দিয়ে ঢুকতে হয় সব লেখা আছে। আপনি আলিপুর চিড়িয়াখানায় গিয়ে যেমন অনেক জন্তু, পাখি এসব দেখতে পাবেন, তেমনই খুব ভাল ভাল জায়গাও পেয়ে যাবেন বসে গল্প করার জন্য। খবরের কাগজ বা চাদর নিয়ে যান, পেতে বসে আড্ডা দিন পরিবারের সকলের সঙ্গে।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল
চিড়িয়াখানা থেকে বেরিয়ে কিছুটা হাঁটলেই ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল দুই ভাবে আপনাকে আনন্দ দিতে পারে। এক হল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের ভিতরে যে মিউজিয়াম আছে সেই মিউজিয়ামে ঢুকে নানান ঐতিহাসিক জিনিস দেখার মাধ্যমে। আর তার বাইরে যে সুন্দর সবুজ বাগান, সুন্দর জলাশয় এসব রয়েছে, সেই সবের মধ্যে আপনি অপার আনন্দ পাবেন। এখানে সকলে মিলে বসে সহজেই সময় কাটাতে পারেন। তবে যাওয়ার আগে অবশ্যই অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে দেখে নেবেন বড়দিনের দিন ওই মিউজিয়ামে আপনাদের ঢুকতে দেওয়া হবে কিনা!
সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল চার্চ
বড়দিনের দিন চার্চে যাবেন না, তা কি হয়! আর কলকাতায় চার্চ বলতেই আগে মনে পড়ে সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল চার্চ। সুন্দর করে সাজানো এই চার্চ এই শীতের সময়ের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ। ভিক্টোরিয়ার ঠিক পিছনেই বলা যায় এই চার্চ। এই চার্চের ভিতরে গিয়ে বেঞ্চিতে খানিক চুপ করে বসতে পারেন। আমরা এই সময়ে সবাই তো খুব চিন্তিত ভিতরে ভিতরে, বেশ খানিক অশান্ত আমাদের মন। এই জায়গা আপনাদের মনে শান্তি এনে দেবে। আর চার্চের চারপাশটা, মানে যাকে ইংরাজিতে আমরা বলি প্রেমাইসেস, সেখানেও খানিক ঘুরতে পারেন। খুব সুন্দর লাগে এই সময়টা ওখানে।
আর বি আই মিউজিয়াম
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার মিউজিয়াম এটি। আমাদের আজ অবধি কীভাবে অর্থনৈতিক নানা পরিবর্তন এসেছে, মুদ্রার কি পরিবর্তন হয়েছে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া কি গুরুত্ব পালন করেছে, সব নিয়ে এই মিউজিয়াম। খুব একটা কেউ কিন্তু আজও এখানে যান না। তবে গেলে কিন্তু আপনি অবাক হয়ে যাবেন। ইতিহাস আপনার সামনে জীবন্ত হয়ে উঠবে। কোনও এন্ট্রি ফি কিন্তু এখানেও নেই। আর বিবাদি বাগের কাছেই এটি। সুতরাং একবার ঘুরে আসতেই হবে।
প্রিন্সেপ ঘাট
আর বি আই মিউজিয়াম থেকে চলে যান প্রিন্সেপ ঘাট। প্রিন্সেপ ঘাটটি গঙ্গার ধারে অবস্থিত এবং নদীর তীরে দেখা যায়। এটি ১৮৪১ সালে বিশিষ্ট অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান পণ্ডিত এবং পুরাকীর্তি জেমস প্রিন্সেপের স্মৃতিতে নির্মিত হয়েছিল। ডব্লিউ ফিটজেরাল্ড দ্বারা ডিজাইন করা স্মৃতিস্তম্ভটি এখনও কলকাতার শীর্ষ দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে। প্রিন্সেপ ঘাট থেকে গঙ্গা এবং দ্বিতীয় হুগলি সেতুর সুন্দর দৃশ্য মন ভাল করে দেয়। যে সমস্ত ভ্রমণকারীরা ঘুরতে চান তাদের বসার জন্য কাছাকাছি পর্যাপ্ত আসন রয়েছে এবং নদীর ধারে আরাম করুন। আপনি কাছাকাছি স্টল থেকে কিছু খাবর কিনে উপভোগ করতে পারেন।
পার্ক স্ট্রিট
তাহলে আর কী, ২৫ ডিসেম্বর সক্কাল সক্কাল বেরিয়ে পড়ুন। পরিবার, প্রিয়জনের সঙ্গে বড় দিন উপভোগ করুন।