ফের বেজে উঠল মুর্শিদাবাদের ঐতিহাসিক ঘণ্টা ঘড়ি
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: শীত মানেই পর্যটন মরশুম, বেড়ানোর সময়। এই সময়টাতেই ফের বেজে উঠল ঐতিহাসিক ঘণ্টা ঘড়ি। নবাবি ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে এই ঘড়ি। প্রায় তিনশো বছরের পুরনো ঘণ্টা ঘড়ি আবারও বেজে উঠতেই বাসিন্দারা আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। প্রবীণরা অনেকেই তা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। ঠিক শুনছেন কিনা যাচাই করতে, অনেকেই হাজারদুয়ারির দক্ষিণ দরওয়াজা সংলগ্ন ভাগীরথীর পাড়ে চলে গিয়েছিলেন।
মুর্শিদকুলি খাঁর জামাই নবাব সুজাউদ্দিন মহম্মদ খাঁ ১৭২৫ সালে ঘণ্টা ঘড়ি প্রতিষ্ঠা করেন, উদ্দেশ্য ছিল শহরবাসীকে সচেতন করা। হাজারদুয়ারি প্রাসাদের প্রবেশপথে দক্ষিণ দরওয়াজা সংলগ্ন ভাগীরথী নদীর তীরের সেই ঘণ্টা ঘড়ি নবাবি ইতিহাস বহন করে চলেছে। সোনা, রুপো, কাঁসা, পিতল-সহ ৩৬টি ধাতু দিয়ে তৈরি বিশাল আকারের ঘণ্টাটি লন্ডন থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল। এক ঘণ্টা অন্তর, ২৪ বার ঘণ্টা বাজত।
সন্ধ্যা ৬টায় নবাবি সেনা ঘণ্টার সঙ্গে বিউগল বাজিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সান্ধ্যকালীন বার্তা দিতেন। ঘণ্টা বাজানোর জন্য তিনজন কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল। নবাবি আমলের পরও বহুকাল ঘণ্টার আওয়াজ শুনে এলাকার মানুষজন সময় সম্পর্কে সচেতন হতেন। সেই ঐতিহাসিক সম্পদ ধ্বংস হতে বসেছিল। মুর্শিদাবাদ পুরসভার উদ্যোগে, ঘণ্টা ঘড়ির সংস্কারের কাজ শুরু হয় চলতি বছরের অক্টোবর মাসে। পুরাতত্ত্ব দপ্তরের সঙ্গে পরামর্শ করে তার সংস্কারের কাজ করা হয়েছে। মুর্শিদাবাদ হেরিটেজ অ্যান্ড কালচারাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির সম্পাদকের কথায়, ঘণ্টা ঘড়ির ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। ঘণ্টার আওয়াজ গর্বের ইতিহাসকে ফিরিয়ে দিয়েছে। নতুন প্রজন্ম ফিরে পেল তাদের হারানো ঐতিহ্য।
পুরনো আদল রেখে ঘণ্টা ঘড়ি সংস্কারের কাজ করেছে পুরসভা। খরচ বহন করছে পুরসভাই। পর্যটকদের পাশাপাশি জেলাবাসীকে নবাবি ইতিহাসের ওই সমস্ত দলিল ফিরিয়ে দিতে পুরসভা উদ্যোগ নিয়েছে। ওয়াসিফ মঞ্জিল খুলে দেওয়া হয়েছে। নতুন ইংরেজি বছর থেকে স্থায়ীভাবে চালু হবে ঘণ্টা ঘড়ি।