২০২৩শে চলে গেলেন যে কৃতি বঙ্গ সন্তানরা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ক’টা দিনের অপেক্ষা মাত্র। বছরের সাঁঝ বেলায় এসে মনে পড়ে সে’সব কৃতিদের কথা; যাঁরা ছেড়ে চলে গিয়েছেন। বাংলার সাহিত্য-সংস্কৃতির দুনিয়া থেকে বিনোদন, ক্রীড়া জগৎ অসংখ্য নক্ষত্রপতনের সাক্ষী থাকল এক বছরে। অভিনেতা থেকে শুরু করে গায়ক, খেলোয়াড় থেকে সাহিত্যিক, যে বিশিষ্টজনেরা চলে গিয়েছেন, তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গির শ্রদ্ধার্ঘ্য
সুমিত্রা সেন: বছরের একেবারে প্রথমে, জানুয়ারিতেই প্রয়াত হন বর্ষীয়ান রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী।
শ্যামল ঘোষ: কলকাতার তিন প্রধানে খেলা শ্যামল ঘোষ প্রয়াত হন জানুয়ারিতে। কলকাতা ময়দানের সাড়া জাগানো ডিফেন্ডার শ্যামল ঘোষের মৃত্যকালে বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। বাংলার হয়ে সন্তোষ ট্রফিও জিতেছিলেন তিনি।
সুজন দাশগুপ্ত: ‘একেন বাবু’র স্রষ্টা লেখক সুজন দাশগুপ্ত প্রয়াত হন চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি।
তুলসীদাস বলরাম: চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রয়াত হয়েছিলেন পিকে, চুনীর সতীর্থ।
১৯৫৬ সালে অলিম্পিক্সে অংশ নেওয়া ভারতীয় ফুটবল দলের শেষ জীবিত সদস্য ছিলেন তুলসী দাস বলরাম। দুরন্ত স্ট্রাইকার হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। লাল-হলুদের হয়ে অজস্র সাফল্য পেয়েছিলেন।
সুবিমল মিশ্র: বাংলা সাহিত্যের গোদার চলে গিয়েছিলেন চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে।
আসলে এটি রামায়ণ চামারের গল্প হয়ে উঠতে পারতো, নাঙা হাড় জেগে উঠেছে, ওয়ান পাইস ফাদার মাদার, চেটে চুষে চিবিয়ে গিলে-র মতো উপন্যাস লিখেছেন সাহিত্যিক সুবিমল মিশ্র।
প্রদীপ সরকার: দুরঙ্গার শুটিংয়ের সময় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, আর ফেরা হয়নি ক্যামেরার কাছে। খ্যাতনামা পরিচালক প্রদীপ সরকার চলতি বছরের মার্চে ৬৮ বছর বয়সে প্রয়াত হন। পরিণীতা, মর্দানি, লগা চুনরি মে দাগ, লাফাংগে পরিন্দের মতো একের পর এক দুর্দান্ত সব ছবি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন তিনি।
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়: এ বছর না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’র স্রষ্টা। বাঙালি পাঠকের কাছে আবেগের নাম বাবলু, বাচ্চু , বিলু, ভোম্বল, বিচ্ছু এবং পঞ্চু। ৮২ বছর বয়সে, হাওড়ার এক নার্সিং হোমে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাঙালির প্রিয় সাহিত্যিক।
গৌতম হালদার: চলতি বছরের নভেম্বরে প্রয়াত হন পরিচালক গৌতম হালদার। রক্তকরবীর শতবর্ষে নাটকটি ফের মঞ্চস্থ হয় তাঁরই নির্দেশনায়। হীরু গঙ্গোপাধ্যায়, আমজাদ আলি খানকে নিয়ে তথ্যচিত্র বানিয়েছিলেন গৌতম হালদার।
সমরেশ মজুমদার: ২০২৩-শেই প্রয়াত হয়েছেন ‘কালপুরুষ’ ও ‘কালবেলা’-র স্রষ্টা সমরেশ মজুমদার। একের পর এক কালজয়ী উপন্যাসের জন্ম দিয়েছে তাঁর কলম। ১৯৮৪ সালে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পান সমরেশ। মে মাসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
সন্দীপ দত্ত: ৭২ বছর বয়সে প্রয়াত হন সাহিত্যিক সন্দীপ দত্ত। লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলন তাঁকে চিরজীবন মনে রাখবে। কলকাতা লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি। ১৯৭৮ সালের ২৩ জুন টেমার লেনে এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি।
অমল চক্রবর্তী: রাজনৈতিক ব্যঙ্গচিত্রে রসিক মনের রসদ জুগিয়েছেন কার্টুনিস্ট অমল চক্রবর্তী। মা দুর্গার আসার প্রাক্কালে প্রয়াত হন এই কিংবদন্তি কাটুর্নিস্ট। বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।
মলয় রায়চৌধুরী: হ্যাংরি আন্দোলনের অন্যতম পুরোধাও চলে গিয়েছেন চলতি বছর।
সৌমেন্দু রায়: সেপ্টেম্বরে প্রয়াত হন সত্যজিতের সিনেমাটোগ্রাফার সৌমেন্দু রায়। মানিকবাবুর সঙ্গে প্রায় পনেরটিতে কাজ করেছিলেন সৌমেন্দু রায়।
অনুপ ঘোষাল: ডিসেম্বরেই স্তব্ধ হয়ে গেল ‘গুপী’ অনুপ ঘোষালের কণ্ঠ। বাংলা এবং হিন্দি ছবিতে তিনি প্লে ব্যাক করেছেন। নজরুল গীতি এবং উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে তিনি ছিলেন অনন্য। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৭৮ বছর বয়সে প্রয়াত হন তিনি।