গয়েশপুরে শুরু হল চৈতন্যের স্মৃতিধন্য কুলিয়া পাটের মেলা
গয়েশপুরে রবিবার থেকে শুরু হল চৈতন্যের স্মৃতিধন্য কুলিয়া পাটের মেলা। মেলার বয়স প্রায় পাঁচশো বছরেরও বেশি। মেলা চলে দশ দিন ধরে। কথিত আছে, চৈতন্য মহাপ্রভুর গয়েশপুরে আগমণকে স্মরণে রাখতে মজে যাওয়া যমুনা নদীর পাশে প্রতি বছর পৌষ মাসের কৃষ্ণ চতুর্দশীতে মেলা বসে। মেলাটি অপরাধ ভঞ্জন-এর মেলা নামেও পরিচিত।
এখানে রয়েছে গৌর নিতাইয়ের মন্দির। এছাড়াও শ্রীকৃষ্ণ, রাধিকা, শিবলিঙ্গ ও অন্যান্য বিগ্রহও রয়েছে। গয়েশপুরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে একটি বিলের পাশে মেলা বসে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ভক্তরা, সকাল থেকেই বিলের জলে স্নান করে গৌর-নিতাই মন্দিরে পুজো দেওয়ার জন্য সমবেত হন। শনিবার থেকেই ভক্তরা মেলায় আসা শুরু করেছিলেন।
জনশ্রুতি রয়েছে, কুলিয়া গ্রামে থাকে দেবানন্দ নামের এক সন্যাসী থাকতেন। তাঁর বাড়িতে ভগবতের ব্যাখ্যা শুনতে চৈতন্যদেবের অনুগামী শ্রীবাস আসেন। ভগবতের ব্যাখ্যা শুনতে শুনতে তিনি প্রেমাবিষ্ট হয়ে কাঁদতে লাগেন। এহেন আচরণকে পাগলামি ভেবে দেবানন্দ ও তাঁর ছাত্ররা শ্রীবাসকে মারতে মারতে বাড়ির বাইরে বার করে দেন। দেবানন্দ কুষ্ঠে আক্রান্ত হন। পরে অনুশোচনা হয় দেবানন্দের। যমুনা নদীর তীরে কুলিয়া এলাকায় তিনি শরীরে কুষ্ঠ রোগ নিয়েই সাধনা শুরু করেন। এক সময়ে চৈতন্যদেব ওই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলেন। দেবানন্দ তাঁর দুঃখের কথা মহাপ্রভুকে বললে, মহাপ্রভু তাঁকে যমুনার জলে ডুব দিয়ে আসতে বলেন। ডুব দেওয়া মাত্র দেবানন্দের কুষ্ঠ রোগ দূর হয়। সারারাত সেখানে হরিনাম সংকীর্তন করেন মহাপ্রভু। এর কয়েক বছর পর ওই তিথিতেই দেবানন্দ দেহত্যাগ করেন। এইভাবেই অপরাধ ভঞ্জন হয় তাঁর। এই ঘটনার স্মরণে প্রতিবছর এখানে মেলা বসে।