বাংলার ধর্মনিরপেক্ষতার স্বপক্ষে বার্তা অমর্ত্য সেনের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ধর্মনিরপেক্ষতা যে কোনও মূল্যে রক্ষা করাই কর্তব্য। সেটা যেন কেউ ভুলে না যায়। রামমন্দির উদ্বোধনের আগে এই কথাই মনে করিয়ে দিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
একদিকে সামনে লোকসভা নির্বাচন। আবার তার আগে দেশের মানুষের সামনে হাইভোল্টেজ ইস্যু করা হচ্ছে রামমন্দির উদ্বোধনকে। এমন পরিস্থিতিতে এবার বাংলার রাজনৈতিক চরিত্র ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষা করা বলে মনে করিয়ে দিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যােপক সংগঠনের সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্যকে ইমেল করে ফের ধর্মনিরপেক্ষতার কথা মনে করিয়ে দিলেন অমর্ত্যর সেন। বর্তমানে তিনি বিদেশে। শুক্রবার একই চিঠি তিনি পাঠান তাঁর কন্যা অন্তরা দেবসেন-সহ অন্যা ন্যর ঘনিষ্ঠদের।
চিঠিতে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে বাংলার অটুট ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র এবং তা রক্ষা করা নিয়ে নিজের বক্তব্য জানিয়েছেন অমর্ত্য সেন। তিনি লিখেছেন, “বাংলার প্রধান ইস্যুব ধর্মনিরপেক্ষতার স্বপক্ষে রুখে দাঁড়ানো। প্রয়োজন শক্তিশালী প্রতিরোধ। বাংলার ধর্মনিরপেক্ষতার দীর্ঘ ঐতিহ্য থাকা সত্বেও তা সবসময় হয়ে ওঠে না। ধর্মভিত্তিক বিভাজন ছেড়ে নিরপেক্ষ রাজনীতির প্রয়োজন বাংলার। ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিকে পরাজিত হতে দেওয়া হবে একটি ভুল। বাংলার একতার চরিত্র আমাদের হারালে চলবে না। আমি আমার দাদু ক্ষিতিমোহন সেনের কথা ভাবছিলাম। তিনি বুঝিয়ে বলতেন, হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের গুরুত্ব প্রাথমিকভাবে পরস্পরকে সহ্যি করা নয়। গুরুত্বটা তার থেকেও অনেক বেশি। বরং বলা যায় গুরুত্বটা হল একসঙ্গে কাজ করার। যেটা ঐতিহাসিক ভাবে হয়ে এসেছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে- প্রাচুর্যময় সাহিত্য, প্রধান স্থাপত্যয়, বিরল কারুকার্য এবং অসংখ্য যৌথ সৃজনশীলতায়।”
লোকসভা নির্বাচনের আগে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের এই মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্বভারতীয় অধ্যাপকদের একাংশ তাঁর এই বার্তার ব্যাখ্যাও করেছেন। তাঁদের কথায়, ‘সাম্প্রদায়িকতার বিষয়টি সামনে রেখে যাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনও বিভেদ আনা না হয় তার পক্ষেই সওয়াল করেছেন নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ।’