শরৎকাহিনি ও রুপোলি পর্দা
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: সিনেমার পর্দার সঙ্গে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কাহিনির সম্পর্ক বড্ড নিবিড়। পরিচালকরা বারবার বেছে নিয়েছেন শরৎবাবুর কাহিনিকে। আজ কথাসাহিত্যিকের মৃত্যুদিন, আজকের দিনে দেখে নিন তাঁর কাহিনিকে ভিত্তি করে নির্মিত সিনেমাগুলোকে।
সিনেমায় শরৎকাহিনি:
দেবদাস: দেবদাস এমন এক উপন্যাস, যা নিয়ে সর্বাধিক ছবি হয়েছে। নানান সময়ে, সে যুগের দিকপালেরা দেবদাসের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। নির্বাক যুগ থেকে কিং খান, সিনেমাপাড়ায় দেবদাসের অন্ত নেই।
১৯৩৫ সালে প্রমথেশ বড়ুয়া দেবদাস করেন। পার্বতী হন যমুনা বড়ুয়া, চন্দ্রমুখীর ভূমিকায় ছিলেন চন্দ্রাবতী দেবী।
১৯৫৫ সালে ফের দেবদাস বানান বিমল রায়। দেবদাস হন দিলীপ কুমার, পার্বতীর চরিত্রে ছিলেন সুচিত্রা সেন এবং চন্দ্রমুখী হন বৈজয়ন্তীমালা। ১৯৭৯ সালে বাংলায় তৈরি হয় দেবদাস, নাম ভূমিকায় ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। মহানায়কও ছিলেন ছবিতে। সঞ্জয় লীলা বনশালীর পরিচালনায় ২০০২ সালে দেবদাস হন শাহরুখ খান। মাধুরী দীক্ষিত-ঐশ্বর্য রাইকে দেখা যায় চন্দ্রমুখী ও পাবর্তীর চরিত্রে।
পরিণীতা: পরিণীতা উপন্যাস অবলম্বনে বাংলা, হিন্দি ও তামিল ভাষায় মোট পাঁচটি সিনেমা তৈরি হয়েছে। বিমল রায় ১৯৫৩ সালে প্রথম ‘পরিণীতা’ উপন্যাস অবলম্বনে ছবি নির্মাণ করেন। শেখর চরিত্রে অশোক কুমার এবং ললিতার ভূমিকায় মীনাকুমারী, অসিত বরণ ছবিতে গিরিনের চরিত্রে অভিনয় করেন। ২০০৫ সালে মুক্তি পায় প্রদীপ সরকারের ‘পরিণীতা’, এই ছবিটিও সমাদৃত হয়েছিল। শেখরের চরিত্রে সেফ আলি খান, ললিতা বিদ্যা বালান ও গিরিন সঞ্জয় দত্ত।
মেজ দিদি: ১৯৫০ সালে কানন দেবী ‘মেজ দিদি’র ভূমিকায় পর্দায় আসেন। হিন্দিতে মেজ দিদি তৈরি হয়েছিল ১৯৬৭ সালে। ছবির নাম ছিল মাঝলি তৈরি। নামভূমিকায় ছিলেন মীনাকুমারী। পরিচালনা করেছিলেন হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়।
সব্যসাচী: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত জনপ্রিয় উপন্যাস ‘পথের দাবী’ অবলম্বনে তৈরি হয়েছিল ‘সব্যসাচী’ নাম ভূমিকায় ছিলেন মহানায়ক উত্তমকুমার। ছবিতে অভিনয় করেন সুপ্রিয়া দেবী, অনিল চ্যাটার্জী, বিকাশ রায় প্রমুখ। ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৭৭ সালে, পরিচালনা করেন পীযুষ বসু।
কমললতা: ১৯৬৯ সালে হরিসাধন দাসগুপ্ত বানান কমললতা। এটিও শরৎকাহিনি। অভিনয় করেন সুচিত্রা সেন, পাহাড়ি সান্যাল, তরুণ কুমার।
রাজলক্ষী ও শ্রীকান্ত: ১৯৫৮ সালে মুক্তি পায় ছবিটি। মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন উত্তমকুমার ও সুচিত্রা সেন। পরিচালনা করেন হরিদাস ভট্টাচার্য।
অভয়া ও শ্রীকান্ত: পরিচালক ছিলেন হরিদাস ভট্টাচার্য। মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন গীতা দে, বসন্ত চৌধুরী, তরণ কুমার প্রমুখেরা। ছবি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৬৫ সালে।
খুশবু: লেখক, গীতিকার গুলজার, ১৯৭৫ সালে ‘পন্ডিত মশাই’ কাহিনি অবলম্বনে নির্মাণ করেন ‘খুশবু’, ছবিতে অভিনয় করেছিলেন জিতেন্দ্র, হেমা মালিনী, শর্মিলা ঠাকুর।
স্বামী: ছবির পরিচালক ছিলেন বাসু চ্যাটার্জী। ১৯৭৭-এ মুক্তি পাওয়া এই ছবির মুখ্যভূমিকায় ছিলেন শাবানা আজমি ও গিরিশ কারনাড। উৎপল দত্ত’ও ছিলেন ছবিতে।
আপনে পরায়ে: ১৯৮০ সালে শরৎচন্দ্রের ‘নিষ্কৃতি’ অবলম্বনে বাসু চ্যাটার্জী এই ছবি বানান। শাবানা আজমি ও অমল পালেকার মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেন। উৎপল দত্ত ও গিরিশ কারনাডও অভিনয় করেন এই ফিল্মে।
ছোটি বহু: শরৎচন্দ্রের লেখা বিন্দুর ছেলে উপন্যাস থেকে তৈরি হয় ছবিটি। মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন রাজেশ খান্না ও শর্মিলা ঠাকুর।
বিরাজ বউ: উত্তম কুমার আর মাধবী মুখোপাধ্যায় করেছিলেন ‘বিরাজ বউ’ ছবিতে। হিন্দিতে বিমল রায় বানিয়েছিলেন বিরাজ বহু। যা ১৯৫৪ সালে মুক্তি পেয়েছিল। হিন্দিতে বিরাজ বউ হন কামিনী কৌশল ও তাঁর স্বামী নীলাম্বর চক্রবর্তীর ভূমিকায় অভিনয় করেন অভি ভট্টাচার্য।